যশোরে গৃহবধূর রহস্যজনকমৃত্যু, স্বামী-শ^শুর পলাতক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর উপজেলার চাউলিয়া গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে মুর্শিদা খাতুন ওরফে মিম (২২) নামে একজন গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ গৃহবধূর স্বজনদের। গতকাল শুক্রবার সকালে পুলিশ ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে। ওই ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর পলাতক রয়েছেন।
এলাকাবাসী জানান, ১০/১১ মাস আগে কচুয়া গ্রামের মৃত আজাদ হাওলাদারের মেয়ে মুর্শিদা খাতুন ওরফে মিমের সাথে চাউলিয়া মধ্যপাড়ার চানমিয়ার ছেলে জাহিদ হোসেন ওরফে মানিকের বিয়ে হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইল ফোনের মিনিট কার্ড কেনার জন্য মানিক স্থানীয় বাজারে যেতে চাইলে মিম তাকে বাধা দেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গোলাযোগ হলে মানিক তাকে মারপিট করে বাজারে চলে যান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মানিক বাড়ি ফিরে আসেন। এর পরপরই মানিক চিৎকার করে তার মাকে ডাক দিয়ে বলে ‘মিম গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলছে’। পরদিন শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা জানতে পারেন মিম আত্মহত্যা করেছেন।
সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সুপ্রভাত মন্ডল জানান, মানিক ও মিমের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি লেগেই ছিলো। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ নিয়ে দুবার শালিস করেছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। শুক্রবার সকালে খবর পান, ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। মানিকের মা তাকে জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে তার ছেলে মোবাইল ফোনের মিনিট কার্ড কিনে বাড়ি ফিরে দেখতে পান মিম গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলছেন। ছেলের চিৎকার শুনে তিনি ছুটে গিয়ে দুজনে ওড়না কেটে তাকে নিচে নামিয়ে আনেন। সে সময় মিম জীবিত ছিলেন। তেল দিয়ে শরীর ম্যাসেজ করে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার সকালে তিনি সেখানে গিয়ে ঘরে লাশ শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান। বাড়িতে মানিকের মা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। ঘটনার পর থেকে মিমের স্বামী ও শ^শুর পলাতক রয়েছেন। পরে সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
এসআই সুপ্রভাত মন্ডল বলেন, খবর পেয়ে মিমের এক ভগ্নিপতি এসেছিলেন। তিনি তার কাছে মিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। তারা মিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন। তিনি বলেন, মিমের স্বামী মানিক মনিরামপুর থানার আলোচিত একটি জোড়া হত্যা মামলার আসামি। ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর মনিরামপুরের উত্তরপাড়ায় এই জোড়া হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। সেখানে বাদল ও আহাদ নামে দুই যুবক খুন হয়েছিলেন।