প্রাইমারিতে গ্রেড জটিলতা: শিক্ষকদের হতাশা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ১৩ তম গ্রেডের নির্ধারিত বেতন পাচ্ছেন না সব শিক্ষক। সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যার ‘আইবাস প্লাস প্লাস’ সফটওয়্যার মডিউলের সিস্টেমে ১৩তম গ্রেডের উচ্চধাপে বেতন নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়টি সংযোজন (ইনপুট) করা হয়েছে। তবুও বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় অনেক শিক্ষক এ গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি, প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১০ম করতে হবে। সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে করতে হবে। সরকার ২০২০ সালের ফেব্রয়ারিতে সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দীর্ঘ একবছরের বেশি সময় পার হলেও এখনও ওই গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন না প্রাথমিক শিক্ষকরা। এ নিয়ে চরম হতাশা বিরাজ করছে শিক্ষকদের মধ্যে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘বলা হয় শিক্ষকরা জাতির গড়ার কারিগর। কিন্তু সব তামাশা শিক্ষকদের সঙ্গেই হচ্ছে। ১৩তম গ্রেড ঘোষণার দেড় বছর পার হলেও এখনো ওই গ্রেডে বেতন পাচ্ছি না। ভাবতে খুব কষ্ট লাগে।’
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, ‘সরকার গ্রেড ঘোষণা করেছে ২০২০ সালের শুরুতে। এখন ২০২১ সাল শেষ হওয়ার পথে। এখনো শিক্ষকরা আগের স্কেলে বেতন তুলছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজন। আজকে শিক্ষকরা পেশা পরিবর্তন করছেন। কারণ কী তা কেউ কখনো জানতে চেয়েছেন? জাতি গড়ার কারিগরদের সঙ্গে যদি এমন অবস্থা হয়, সেখানে বলার কিছু নেই।’
প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেডে বেতন পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দেওয়া হোক। কিন্তু সরকার আমাদের দাবি প্রত্যাখান করেই যাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা রাস্তায় নেমে যে দাবি তুলব, সে অবস্থাও নেই।’
১৩ম গ্রেড যথাযথ বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এম মনছুরুল আলম একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, সফটওয়ারে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রির চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকদের উন্নীত স্কেলের বেতন নির্ধারণের অপশন সংযোজনের জন্য ‘আইবাস প্লাস প্লাস’ প্রকল্প দপ্তরকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই তা সংযোজন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও মাঠ পর্যায়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে উন্নীত স্কেলে সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ সম্পন্ন করেনি। এর ফলে শিক্ষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।এ পরিস্থিতে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা অফিসগুলোকে মে মাসেই শিক্ষকদের বেতন ১৩তম গ্রেডে নির্ধারণের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রতন চন্দ্র পন্ডিত বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন জটিলতা সমাধান করা হয়েছে। কিছু জায়গায় সমস্যা থাকলেও দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। তবে ১০ম গ্রেড ও ১১তম গ্রেড নিয়ে এখনো কোনো চিন্তা নেই।’