এনটিএমসির জন্য ৬৫ কোটি টাকায় কেনা হচ্ছে বিশেষ জাঙ্ক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের জন্য ৬৫ কোটি টাকায় কেনা হচ্ছে বিশেষ জাঙ্ক। এলক্ষ্যে ‘ভেইকেল মাউন্টেড মোবাইল ইন্টারসেপ্টর অ্যান্ডরিলেটেড সার্ভিস’ শীর্ষক একটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (৯ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিস্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শামসুল আরেফিন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৬তম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ২০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য একটি এবং ক্রয় সংক্রান্ত-কমিটির অনুমোদনের জন্য ১১টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৬টি, স্থানীয় সরকার বিভাগের ২টি, জননিরাপত্তা বিভাগের ১টি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১টি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রস্তাব ছিল।
তিনি বলেন, ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১১টি প্রস্তাবের মোট অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৩০ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩০ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি হতে ব্যয় হবে ৮৯০ কোটি ৬২ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ টাকা এবং এডিবি, এএফডি ও ইআাইবি ঋণ ১,৬৮৮ কোটি ৬৮ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭২ টাকা।
বৈঠক শেষে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ২০২০-২১অর্থবছরে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের জন্য ১টি ‘ভেইকেল মাউন্টেড মোবাইল ইন্টারসেপ্টর অ্যান্ডরিলেটেড সার্ভিস’ কেনার লক্ষ্যে সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি দরপত্র জমা পড়ে যার মধ্যে ১টি রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে একমাত্র রেসপনসিভ দরদাতা প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক তরু গ্রুপ লিমিটেডের স্থানীয় এজেন্ট স্মার্ট এসসিএম সলিউশন, ঢাকার ৬৫ কোটি ৫৬ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪০ টাকায় ১টি ‘ভেইকেল মাউন্টেড মোবাইল ইন্টারসেপ্টর অ্যান্ডরিলেটেড সার্ভিস’ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, গত ২০১৫ সালের ৪ মার্চ তারিখের সিসিজিপি সভার অনুমোদনক্রমে ঢাকা ওয়াসার ডিইএসডব্লিউএস প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে (১) চীনের কুনওয়া-ডিডিসি-এফসিইএ এবং (২) বাংলাদেশের ভারনাকুলার কনসালট্যান্ট লিমিটেডকে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ ৮১ হাজার ৬৪০ টাকায় নিয়োগের চুক্তি করা হয়। প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ ৩৬ মাসের পরিবর্তে ৭৫ মাস (৩০ জুন, ২০২১) পর্যন্ত বাড়ানোর কারণে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২ কোটি ৭১ লাখ ৪ হাজার ৯৬৭ টাকার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর তারিখের সিসিইএ সভার অনুমোদনক্রমে ‘দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার গৌরিপুর নামক স্থানে খরা মৌসুমে সম্পূরক সেচ দেওয়ার লক্ষ্যে পুনর্ভরা নদীর উপর সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং-ডিডব্লিউসিএস-১ এর নির্মাণকাজ বাস্তবায়নে ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লি., নারায়ণগঞ্জকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার ৩২৪ টাকা। প্রকল্পের কাজ চলমান অবস্থায় ২০১৯ সালে বন্যায় বিধ্বস্ত হওয়া রিং বাঁধ মেরামতসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক মেরামত কাজের জন্য ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১২ কোটি ৫ লাখ ১ হাজার ৪৯৯ টাকায় পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
বৈঠকে ঢাকা ওয়াসার ঢাকা এনভায়রসমেন্টালি সাসটেইনাবল ওয়াটার সাপ্লাই (ডিইএসডব্লিউএস) প্রকল্পের প্যাকেজ-৩ দশমিক ১ এর আওতায় রামপুরা থেকে ভাটারা হয়ে এয়ারপোর্ট রোড, উত্তরা, গুলশান, বনানী, কচুক্ষেত পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার পরিশোধিত পানির ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন কাজের জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৬টি দরপত্র জমা পড়ে যার মধ্যে ৩টি সাবস্ট্যানশিয়ালি রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান চায়না জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এর কাছ থেকে ৫৮৯ কোটি ৩১ লাখ ৯২ হাজার ৯৭৪ টাকায় প্রকল্পের প্যাকেজ-৩ দশমিক ১ এর আওতায় ২৫ কিলোমিটার পরিশোধিত পানির ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন কাজ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
বৈঠকে ‘বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন (৪র্থ পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ শিশুকে ৬ মাস মেয়াদি উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং ৪ মাস মেয়াদি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এনজিও নির্বাচনের লক্ষ্যে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) প্রকাশ করলে ৭৫৭টি প্রস্তাব পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত ১১২টি এনজিও’র কাছে রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল (আরএফপি) আহবান করা হলে ১১২টি আরএফপি পাওয়া যায় যা রেসপনসিভ হয়। পিপিসি কর্তৃক যাচাই-বাছাই শেষে সুপারিশকৃত ১১২টি এনজিও’র মাধ্যমে ১ লাখ শিশুকে ১৬০ কোটি টাকায় ৬ মাস মেয়াদি উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং ৪ মাস মেয়াদি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।