যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গে তিনজনের মৃত্যু

0

বি এম আসাদ ॥ করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল জহুরুল হক (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে, হাসপাতালের আইসোলেশনে আরো দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনার উপসর্গ নিয়ে তাদের মৃত্যু হয়। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা ভারত ফেরত এক যাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় যশোরের পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছেন, মৃত জহুরুল হক করোনায় আক্রান্ত হলে গত ৫ জুন দুপুরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের রেডজোনে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ৭ জুন তাকে নেয়া হয় আইসিইউ-তে গতকাল সকালে জহিরুল হককে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়। জহুরুল হকের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাজীর বেড়গ্রামে। জহুরুল হক ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিবের চাচা। এ নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ১৭ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হলো।
এদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের পুরুষ আইসোলেশন ওয়ার্ডে আবুল কাসেম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বেলা ১২টার দিকে তাকে আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৫ মিনিটের ব্যবধানে দুপুরে ১২টা ৩০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সানজিদা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আবুল কাসেমের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছায়। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় মহিলা আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন উষারাণী (৮০) নামের এক নারী। উপশহর এফ ব্লকের সৈকত চৌধুরীর ঠিকানায় ৭ জুন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের ব্যবধানে তার মৃত্যু হয়। আবুল কাসেম ও উষা রাণীর মৃত্যুর পর করোনা সন্দেহে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ নিয়ে আইসোলেশন মোট ১শ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শহরের আবাসিক হোটেল ম্যাগপাই-এ ভারত ফেরত এক নারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। রাখি দাস (৪৫) নামে ওই নারীকে গতকাল যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের রেডজোনে ভর্তি করা হয়েছে। রাখি দাস বগুড়া সদরের চেলোপাড়ার দীপক দাসের স্ত্রী। গত ২৬ মে তিনি ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে দেশে প্রবেশ করেন।
সূত্র জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সকালে হাসপাতালের রেডজোনে রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৭ জন। সন্ধ্যায় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ জনে। এর ভেতর ২০ জন মহিলা। ভারত ফেরত রোগী ছিল ১ জন শিশুসহ ২৫ জন। ১২ জন পুরুষ ও ১২ জন মহিলা রয়েছেন ভারত ফেরত যাত্রীদের ভেতর। এছাড়াও ঝিকরগাছার মল্লিকপুর গ্রামের এক পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও পুত্রকে রেডজোনে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, ওই গ্রামের আজিজুর রহমান (৩৫) স্ত্রী শিউলী বেগম (৩০) ও ছেলে মোস্তাকিম (১০)। করোনা রোগীর ভীড়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এখন ভিন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।