পলিথিন বিরোধী আইন কার্যকর হোক

0

সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও গতপরশু পালিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। অথচ, বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা এখনও পর্যন্ত পরিবেশদূষণ রোধ করতে পারিনি। পরিবেশদূষণের কারণে রাজধানী ঢাকা পরিচিত হচ্ছে নিকৃষ্ট শহর হিসেবে। সামান্য বৃষ্টিতেই ঢাকার রাস্তায় পানি জমে। গত ১ জুনের বৃষ্টিতে খোদ রাজধানীতে তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল। কোনো কোনো রাস্তায় বৃষ্টির পানি ১৮ ঘণ্টার বেশি ছিল। বৃষ্টি বেশি হওয়ায় ড্রেনগুলো পানি ধারণক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। অনেক এলাকার খাল দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন পাম্পের কাছে যেতে পারে না।
ঢাকা মহানগরীতে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ পলিথিন। বুড়িগঙ্গার তলদেশে পলিথিনের উঁচু আস্তরণ তৈরি হয়েছে। ঢাকার চারপাশের প্রতিটি নদীরই একই অবস্থা। ঢাকার ভেতরের খালগুলো মরে গেছে। এর জন্যও প্রধানত দায়ী এই পলিথিন। বাংলাদেশে ২০০২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর পরিপ্রেক্ষিতে পলিথিনের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার, উৎপাদন, বিপণন ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়। আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি নিষিদ্ধ পলিথিনসামগ্রী উৎপাদন করে, তাহলে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা, এমনকি উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। সেই সঙ্গে পলিথিন বাজারজাত করলে ছয় মাসের জেলসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়। এর পরও বন্ধ হয়নি ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার। সরকার পলিথিনের ব্যাগ উৎপাদন নিষিদ্ধ করলেও ৫৫ মাইক্রোনের অধিক পলিথিনজাতীয় পণ্য বা মোড়ক উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনুমোদিত কাঁচামাল আমদানি করে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদিত হচ্ছে। প্রতিবছর প্রায় ১৮ শতাংশ হারে বাড়ছে বর্জ্য। বিশাল এই বর্জ্যরে বড় একটি অংশ হলো পলিথিন। পলিথিন দীর্ঘদিন ধরে মাটিতে পড়ে থাকলেও পচে না। রাজধানীর খালগুলো পরিষ্কার করার কয়েক দিনের মধ্যেই পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যে আবারও পরিপূর্ণ হয়ে যায়। পলিথিন বর্জ্যকে আলাদা করে বিশেষ কৌশলে রিসাইক্লিং বা ডাম্পিং করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আইনের ব্যাখ্যায় থাকা দুর্বলতাগুলো দূর করতে হবে। কঠোরভাবে এসংক্রান্ত আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে।