বৈশ্বিক চিনি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে ভারত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥বৈশ্বিক চিনি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে ভারত। আগামী মৌসুমে দেশটির উৎপাদন ৬০ লাখ টন বাড়বে। পাশাপাশি ভারতের চলতি মৌসুমে বৃহৎ পরিমাণ মজুদ বৈশ্বিক চিনি খাতকে শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) করা প্রাক্কলনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
ভারতের রাজ্যগুলোতে চিনির লেনদেন ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে ইউএসডিএর প্রাক্কলনের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। তবে দেশটির চিনি শিল্প বিশেষ করে বেসরকারি মিল-সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি মানতে নারাজ। তারা মনে করছেন, আগামী মৌসুমের চিনি উৎপাদন নিয়ে প্রাক্কলন করার সময় এখনো আসেনি।
এদিকে ইউএসডিএ উৎপাদনের পাশাপাশি আগামী মৌসুমে ভারতের চিনি রফতানি নিয়েও প্রাক্কলন করেছে। প্রাক্কলন অনুযায়ী রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ লাখ টনে, যা চলতি মৌসুমের সমপরিমাণ।
‘সুগার: ওয়ার্ল্ড মার্কেটস অ্যান্ড ট্রেড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ইউএসডিএ জানায়, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে চিনি উৎপাদনের আগামী মৌসুম শুরু হবে চলতি বছরের অক্টোবরে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ মৌসুম শেষ হবে। এ মৌসুমে বিশ্বের শীর্ষ চিনি উৎপাদনকারী দেশ ব্রাজিলের উৎপাদন বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। এ পরিস্থিতিতে ঘাটতি পুষিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত ও থাইল্যান্ড বৈশ্বিক উৎপাদন গতিশীল রাখবে। আগামী মৌসুুমে বৈশ্বিক চিনি উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৮ কোটি ৬০ লাখ টনে।
এদিকে গত কয়েক মৌসুমে কমতির দিকে থাকলেও আগামী মৌসুমে থাইল্যান্ডের চিনি উৎপাদন বাড়বে। এক্ষেত্রে দেশটি ভারতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ইউএসডিএ জানায়, থাইল্যান্ডে উৎপাদন মৌসুম শুরু হবে ডিসেম্বরে। দেশটির চিনি উৎপাদন ৩০ লাখ টন বেড়ে ১ কোটি ৬ লাখ টনে পৌঁছবে। আগামী মৌসুমে থাইল্যান্ড ১ কোটি ৪ লাখ টন চিনি রফতানি করবে।
অল ইন্ডিয়া সুগার ট্রেডারস অ্যাসোসিয়েশনের (এআইএসটিএ) প্রেসিডেন্ট প্রফুল ভাইথালানি বলেন, চলতি মৌসুমে থাইল্যান্ডের চিনি উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তবে আগামী মৌসুমে তাদের উৎপাদন বাড়বে। ফলে ভারতের সঙ্গে থাইল্যান্ডের প্রতিযোগিতার বাজার তৈরি হবে।
২০১৮-১৯ মৌসুমে থাইল্যান্ড ১ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার টন চিনি উৎপাদন করেছে। কিন্তু এর পরের মৌসুম থেকে দেশটির উৎপাদন কমতে থাকে। ২০১৯-২০ মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ টন। চলতি মৌসুমে দেশটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার টন চিনি উৎপাদন করেছে।
এদিকে ২০১৯-২১ মৌসুমে ভারতের উৎপাদনও কমে যায়। ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (ইসমা) জানায়, এ সময় দেশটি ২ কোটি ৭৪ লাখ ২০ টন চিনি উৎপাদন করেছিল। তবে চলতি মৌসুমে উৎপাদন বেড়ে তিন কোটি টনে দাঁড়িয়েছে।
ইউএসডিএর প্রাক্কলন অনুযায়ী, আগামী মৌসুমে বৈশ্বিক চিনি রফতানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৬ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টনে। চলতি মৌসুমে রফতানি করা হয়েছে ৬ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার টন। আসন্ন মৌসুমে সবচেয়ে বেশি চিনি রফতানি করবে থাইল্যান্ড।
এদিকে ইসমার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিনাশ ভার্মা বলেন, আগামী মৌসুমের উৎপাদনের প্রাক্কলন করার সময় এখনো আসেনি। চলতি বছর আমাদের দেশ প্রায় ৩ কোটি ২৮ লাখ টন চিনি উৎপাদন করেছে। এর মধ্যে ২৫ লাখ টনেরও বেশি ব্যয় হয়েছে ইথানল উৎপাদনে। তিনি বলেন, মোট আখ আবাদকৃত জমির ওপর জুনের শেষে অথবা জুলাইয়ের শুরুর দিকে জরিপ চালাবে ইসমা। এর ওপর ভিত্তি করেই আগামী মৌসুমের উৎপাদনের প্রাক্কলন করা হবে।