ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : সুন্দরবনে ৮ অফিস বন্ধ ঘোষণা

0

মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা॥ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসে’র কারণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আওতাধীন আটটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ফরেস্ট অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই সব অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৫০ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া আটটি অফিসের মধ্যে রয়েছে- শরণখোলা রেঞ্জের, দুবলা, কোকিলমনি, শ্যালা, কচিখালী ও চরখালী টহল ফাঁড়ি। চাঁদপাই রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে- তাম্বুলবুনিয়া, জোংড়া ও ঝাপসি টহল ফাঁড়ি। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বুধবার (২৬ মে) বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে ইতোমধ্যে সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আটটি টহল ফাঁড়ি বন্ধের পাশাপাশি সেখানকার লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবনের জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও সুন্দরবন বুক পেতে উপকূলবাসীর রক্ষা করবে।
এদিকে এখন পর্যন্ত মোংলা বন্দরসহ তৎসংলগ্ন সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসে’র তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ার সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এর আগে রোববার রাতে এ এলাকার ওপর দিয়ে হালকা-মাঝারি ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেলেও কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। সোমবার সকাল থেকে রোদ্র উজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করছে। এনিয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক প্রস্তুতি সভা করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলা ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বন্দর, পৌরসভা ও উপজেলার পক্ষ থেকে। এছাড়া নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড পৃথক সভা শেষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি মোংলা বন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। মোংলায় এবার মোট ১০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছেন স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া এখানকার ব্যক্তি মালিকানা ও সরকারি-বেসরকারি বহুতল পাকা ভবনও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলেশ মজুমদার বলেন, মোংলায় মোট ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র পরিষ্কার করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে আগতদের জন্য বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধীকরণ ট্যাবলেট, শুকনা খাবার মজুত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে কানাইনগর, চিলা ও জয়মনি এলাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে। দুর্যোগ ঘিরে প্রায় ১ হাজার ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।