অভয়নগরে ডাকাতি ও হত্যার ঘটনায় দুজন আটক, সোনার অলঙ্কার উদ্ধার

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া গ্রামের বাসিন্দা দেবাশীষ সরকার ওরফে সঞ্জয়কে হত্যা ও তার বাড়িতে ডাকাতির সাথে জড়িত এক ডাকাতসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। গত বৃহস্পতিবার রাতে খুলনার তেরখাদা উপজেলার মোকামপুর ও দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনী মহল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় লুণ্ঠিত সোনার অলঙ্কারের আংশিক উদ্ধার করা হয়েছে। আটক দুজন হলেন, খুলনার তেরখাদা উপজেলার মোকামপুর গ্রামের মোতালেক খাঁ ওরফে মোতাহের খাঁ’র ছেলে সেলিম খাঁ ওরফে শহিদুল খাঁ (৩৮) ও দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনী মহল এলাকার মুক্তার শেখের ছেলে নান্টু শেখ (৪৯)।
পিবিআই সূত্র জানায়, গত ২৫ এপ্রিল দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে চলিশিয়া গ্রামের বাসিন্দা দেবাশীষ সরকার ওরফে সঞ্জয়ের বাড়িতে একদল ডাকাত হানা দেয়। তারা রান্নাঘরের জানালার গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢুকে পরিবারের লোকজনকে জিম্মি করে রাখে। এরপর তারা আলমারি ভেঙে ও ওয়ারড্রব খুলে লুটতরাজ করে। এমনকী পরিবারের নারী সদস্যদের কাছে থাকা সোনার অলংকার কেড়ে নেয় তারা। ডাকাতরা ওই বাড়ি থেকে নগদ মোট ৪ লাখ টাকা এবং ২১ ভরি ৮ আনার সোনার অলঙ্কার লুট করে। এ সময় ডাকাতদের লোহার রডের আঘাতে আহত হন দেবাশীষ সরকার ওরফে সঞ্জয়সহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যরা। পরে ডাকাতরা চলে গেলে পরিবারের লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ সরকার ওরফে সঞ্জয়কে মৃত ঘোষণা করেন। পরে এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি অ্যাড. তপন কুমার বিশ্বাস অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের আসামি করে অভয়নগর থানায় একটি মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন পিবিআই ইনসপেক্টর দেবাশীষ মন্ডল। তিনি তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ডাকাতির সাথে জড়িত সেলিম খাঁ’কে শনাক্ত করেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটক করেন। তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত একটি সোনার আংটি উদ্ধার করা হয়। পরে আটক সেলিম খাঁ’র স্বীকারোক্তিতে নান্টু শেখকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। নান্টু শেখ ডাকাতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত সোনার অলঙ্কারের মধ্যে সাড়ে ৮ ভরি ক্রয় করেছিলেন। ডাকাত গ্রুপের সাথে তার গোপন সম্পর্কও রয়েছে। তিনি ডাকাতদের কাছ থেকে গোপনে সোনার অলঙ্কার কিনে থাকেন। এ কারণে তাকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি সোনার অলঙ্কার খুলনার হেলাতলার রিংকু স্টোর নামে একটি সোনার দোকানের মালিক বিপ্লবের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এরপর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জুয়েলারি ব্যবসায়ী বিপ্লবের কাছ থেকে গলিত সাড়ে ৬ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়। সূত্র আরো জানায়, আটক সেলিম খাঁ ও নান্টু শেখকে শুক্রবার যশোরের আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।