ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারেননি লেডি গাগা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥মার্কিন পপ তারকা লেডি গাগা ১৯ বছর বয়সে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। গানের রেকর্ডিং পুড়িয়ে দেয়ার হুমকির মুখে একজন সঙ্গীত প্রযোজক তাকে ধর্ষণ করে। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন লেডি গাগা। ২০০৫ সালের ওই ঘটনা এখনও ভুলতে পারেননি ৩৫ বছর বয়সী গাগা। খবর বিবিসির।
অপরাহ উইনফ্রে এবং প্রিন্স হ্যারির নতুন অ্যাপল টিভি প্লাস শো-এর প্রথম পর্বে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনার বর্ণনা দেন লেডি গাগা।লেডি গাগা বলেন, ‘আমি সেসময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। তা থেকে বেরিয়ে আসতে আমি রীতিমতো যুদ্ধ করেছি। এখনও সেই ঘটনা আমাকে পীড়া দেয়। আমি ভয়াবহ সেই পরিস্থিতি ভুলতে পারি না। মনে হয় দুঃস্বপ্ন দেখছি।’
নিজের জীবনের ভয়াবহ ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে গাগা বলেন, ‘আমার বয়স তখন সবেমাত্র ১৯ বছর। একজন শিল্পীর ক্যারিয়ার শুরুর সময়ে যেমন সংগ্রাম করতে হয়, আমিও সেটার মধ্যে ছিলাম। সেসময় আমি একটি সঙ্গীত প্রযোজনা টিমের সঙ্গে কাজ করছিলাম। আমার কিছু গান রেকর্ড করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সঙ্গীতের প্রযোজক আমাকে হঠাৎ পোশাক খুলতে জোর করেন। আমি সেখান থেকে কৌশলে বেরিয়ে আসি। পরে তারা আমাকে ফোনে জানায়, আমি যদি প্রযোজকের কুপ্রস্তাবে রাজি না হই, তারা আমার রেকর্ড করা সব গান পুড়িয়ে দেবে। বাধ্য হয়ে আমি সেখানে ফিরে গিয়েছিলাম।’
লেডি গাগা বলেন, ‘আমি প্রযোজককে অনেক অনুরোধ করলেও সে থামেনি। তারা স্টুডিওর কক্ষ তালাবদ্ধ করে আমার ওপর অত্যাচার চালায়। আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। তারা আমাকে কয়েক মাস স্টুডিওতে রাখে। সেমময় আমি প্রচুর বমি করেছিলাম এবং মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমি মানসিক এবং শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলাম। একা কোথাও থাকলে আমি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়তাম।’
তবে পুরো সাক্ষাৎকারে সঞ্চালক বারবার সেই সঙ্গীত প্রযোজকের নাম জানার চেষ্টা করলেও ভুলেও অভিযুক্তের নাম মুখে আনেননি লেডি গাগা।
এর আগে ২০১৪ সালে সর্বপ্রথম যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার বিষয়টি জনসম্মুখে প্রকাশ করেন লেডি গাগা। এছাড়া #মিটু-এর মতো উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি নিপীড়িত হয়েছি। তবে নিপীড়কের নাম আমি ভুলেও মুখে আনতে চাই না। শুধু মনপ্রাণ দিয়ে চাই, কেউ যেন আমার মতো ভুক্তভোগী না হয়।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, লেডি গাগার প্রকৃত নাম স্টেফানি জোয়ান অ্যাঞ্জেলিনা জার্মানোটা। ১৯৮৬ সালের ২৬ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিচিত্র ফ্যাশনের জন্য তিনি বেশ আলোচিত। গানের পাশাপাশি এইডস ও বন্যার্তদের সহযোগিতাসহ নানা ধরনের সামাজিক কাজে যুক্ত তিনি।
২০১৩ সালের বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস-এর ৪৫ বছরের কমবয়সী সবচেয়ে প্রভাবশালী নারীদের তালিকায় শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছেন লেডি গাগা। তিনি একাধারে সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার, প্রযোজক, নৃত্যশিল্পী, অ্যাক্টিভিস্ট, ব্যবসায়ী, ফ্যাশন ডিজাইনার, অভিনেত্রী।
২০০৫ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই সঙ্গীতজগতে যাত্রা শুরু হয় লেডি গাগার। এ পর্যন্ত প্রকাশিত তিনটি অ্যালবামই তাকে এনে দিয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। ২০০৮ সালে গাগার প্রথম অ্যালবাম ‘দ্য ফেম’ বাজারে আসে। পরের বছরই আসে তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘দ্য ফেম মনস্টার’। সর্বশেষ ২০১১ সালে মুক্তি পায় গাগার তৃতীয় অ্যালবাম ‘বর্ন দিস ওয়ে’।