শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাছ কেটে বিক্রয় করলেন টিএইচএ

0

শেখ আব্দুল হাকিম, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)॥ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লক্ষাধিক টাকা মুল্যের অন্তত ছয়টি মেহগনি গাছ কেটে বিক্রয় করা হয়েছে বলে হাসপাতালের টিএইচএ অজায় কুমার সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসকদের জন্য নির্ধারিত আবাসিক ভবন সংলগ্ন অংশ থেকে দীর্ঘদিনের পুরানো এসব মেহগনি গাছ কাটা হয়। দরপত্র আহবান ছাড়াই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একার সিদ্ধান্তে গাছগুলো বিক্রয় করেছে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে। গত দুই দিন ধরে লক্ষাধিক টাকার মেহগনি গাছগুলো কেটে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। গাছ কাটার খবরে গত বুধবার দুপুরে হাসপাতাল চত্ত্বরে যেয়ে ছবি উঠানোর সময় বেশ কয়েক জন অপরিচিত যুবককে মুটোফোনে ডেকে নিয়ে সংবাদকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানোরও চেষ্টা করা হয়। গাছ কাটার সাথে জড়িতরা নিজেদের কাঠ ব্যবসায়ী বলে দাবি করেন। তারা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নির্দেশে গাছ কাটার কথা জানান।
সরেজমিনে শ্যামনগর উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেয়ে দেখা যায় একাধিক ইঞ্জিন চালিত ভ্যানযোগে গাছের কর্তনকৃত কাঠ বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় বড় বড় টুকরোগুলো ফিতা দিয়ে মেপে ‘লক’ আকারে প্রস্তুত করা হচ্ছে। গাছ কাটার সাথে জড়িতরা সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে গাছের কিছু বড় অংশ ঘাসের নিচে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। মগ ডাল কাটার কাজ সম্পন্নের পর মুল গাছের গুড়ি কর্তনের যাবতীয় প্রস্তুতি সত্ত্বেও দ্রুত তারা গাছে বাঁধা দড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে ভ্যানযোগে সরিয়ে নিয়েছে।
স্থানীয় মনির, জামিদুল ও জিয়াউর রহমানসহ কয়েকজন জানান, মঙ্গল ও বুধবার দুই দিন ধরে কয়েক জন শ্রমিকরা হাসপতালের মধ্যে লক্ষাধিক টাকার মেহগনি গাছগুলো কেটে নিয়েছে। হাসপাতাল কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গাছগুলো কাটা হচ্ছে ভেবে তারাও বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করার চেষ্টা করেনি। তারা অভিযোগ করেন শুরুতে গাছের মগ ডালসহ যাবতীয় ডাল-পালা অপসরানের পর অতি গোপনে মুল গাছ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সাইফুল ইসলাম নামের বাদঘাটা গ্রামের এক যুবক জানায়, সকাল থেকে অন্তত বিশটির বেশী ইঞ্জিন ভ্যানযোগে কর্তনকৃত গাছের ছোট ছোট টুকরো গুলো বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে গাছ কাটার সাথে জড়িতদের একজন জানান, আমরা হুকুমের গোলাম। মালিকের সাথে চুক্তির পর তার নির্দেশে আমরা গাছগুলো কেটেছি। ‘লক’গুলো চেরাই এর জন্য কাঠ ব্যবসায়ীরা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অবশিষ্ট কাঠ উপজেলা সদরের ঘোষ ডেয়ারীসহ বিভিন্ন হোটেল রেষ্টুরেন্টে এর বিক্রি করা হবে। প্রকাশ থাকে যে, ইতিপুর্বে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রবেশদ্বার সংলগ্ন কয়েকটি বড় আকারের মেহগনি গাছ একই কৌশলে কেটে উধাও করা হয়। গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অজয় কুমার সাহা বলেন, আমার বাসার জন্য ঝুঁকিপুর্ন হয়ে পড়ায় মেহগনি গাছের কিছু ডাল কাটা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তবে গাছ গুলো বিক্রয়ের বিষয় ও গাছ উজাড় দেখা যাচ্ছে বলে জানানো হলে তিনি মুটোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, এইভাবে গাছ কাটার কোন নিয়ম নেই। তার বাসভবনের ক্ষতির শংকা থাকলে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে পরামর্শ করতে পারতেন। এটা নিছক অন্যায়।