চৌগাছায় বিল এড়োলের ব্রিজটির করুণ দশা

0

এম এ রহিম, চৌগাছা (যশের) সংবাদদাতা ॥ যশোরের চৌগাছা উপজেলার বিল এড়োলের ব্রিজটি মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। ব্রিজের দুই প্রান্তে পাকা সড়ক থাকলেও ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। রিকশা-ভ্যান, বাইসাইকেল আর মোটরসাইকেলই এ সড়কের চলাচলের একমাত্র ভরসা। চৌগাছার পাশাপোল ইউনিয়নের ছোটকুলি-বড়গোবিন্দপুর সড়কের বিল এড়োলের ওপর জরাজীর্ণ এই চিকন ব্রিজ দুই উপজেলার আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নড়বড়ে ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। তবুও টনক নড়ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
সূত্র জানায়, ৩৮ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে এই ব্রিজটি। এটি সলুয়া ও কায়েমকোলা মেইন সড়কের সাথে সংযুক্ত। প্রথমে বাঁশ-কাঠের তৈরি ছিল এই ব্রিজ। যা ১৯৮৪ সালে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে কংক্রিটের পিলারের ওপর ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এই ব্রিজ দিয়ে চৌগাছা উপজেলার ছোটকুলি, বড়গোবিন্দপুর, গোয়ালবাড়ী, বড়কুলি, মালিগাতি, রাণীয়ালী, শুরেশ্বরকাটি, বিলএড়োল, বুড়িন্দীয়া, নওদাগা, গোপিনাথপুর, দশপাকিয়া, যশোর সদর উপজেলার আরিসপুর, চান্দুটিয়া, ঝাওদিয়া এবং পাশ^বর্তী ঝিকরগাছা উপজেলার কায়েমকোলা, জয়রামপুর, ঘোড়দহ, মনহরপুর ও চান্দাসহ তিন উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের দুই লক্ষাধিক মানুষ জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ব্রিজ-কালভার্টের উন্নয়ন হলেও দীর্ঘ ৩৮ বছরে সংস্কার করা হয়নি এই ব্রিজটি। ব্রিজের রেলিং, কংক্রিটের পিলারগুলো ধসে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজ দিয়ে এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ চলাচল করছে।
পাশাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘চিকন এই ব্রিজটি নিয়ে আমি অনেক জায়গায় কথা বলেছি। উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংসহ বিভিন্ন মিটিংয়ে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোথাও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।’
এ ব্যাপারে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ব্রিজটির পাশেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমানের কবর রয়েছে। সেজন্য মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজটি পুনঃনির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। আগামী অর্থ বছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে।’ উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুর রহমান বলেন, ‘ব্রিজটি এলজিইডি’র নয়। সে কারণে এই ব্রিজের কোন তথ্য আমার দপ্তরে নেই।’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, ‘আগামী অর্থ বছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ব্রিজের কাজ করা হবে। অধিক গুরুত্ব সহকারে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ করা হবে।’ এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান বলেন, ‘জটিলতা থাকলেও এ্ই ব্রিজ নির্মাণে কার্যতালিকার এক নম্বরে রাখা হবে। আশা করছি, দ্রুত বরাদ্দ মিলবে।’