বাগেরহাটে স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় গেলেন স্বামী

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ টিকটক ও লাইকি অ্যাপসে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করার কারণে স্ত্রী সোমা আক্তারকে (১৯) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে স্বামী। গত শনিবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট শহরে দশানী উত্তরপাড়া এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে আটটার দিকে স্বামী আব্দুল¬াহ আল নাইম ওরফে শান্ত (২৩) বাগেরহাট মডেল থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত সোমা আক্তার বাগেরহাট সদর উপজেলার সিংড়াই গ্রামের আব্দুল করিম বকসের মেয়ে। তিনি বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করতেন। আব্দুল¬াহ আল নাইম ওরফে শান্ত দশানী উত্তরপাড়া এলাকার গোলাম মোহাম্মাদের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি বায়িং হাউসে কাজ করতেন। নিহতের বড় বোন নাজমা আক্তার ও ও তার চাচা হাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালে নাইম ও সোমা প্রেম করে বিয়ে করে। বিয়ের পর তারা বেকার থাকায় দুজনে রোজগার করতে জনপ্রিয় অ্যাপস টিকটক দিয়ে নানা ধরনের ভিডিও তৈরি করে তাদের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করত। এই দিয়ে তাদের বেশ ভালোই আয়-রোজগার হচ্ছিল।
এর মধ্যে নাইম ঢাকার একটি বায়িং হাউজে চাকরি পেয়ে চলে গেলে সোমা আমাদের বাড়িতে থেকে পড়ালেখার পাশাপাশি টিকটকে ভিডিও তৈরি করে আয় করছিল। এই আয় দিয়ে সোমার ভালোই চলছিল। ঢাকায় যাওয়ার পর নাইম মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। সে নেশা করতে প্রায়ই সোমার কাছে টাকা চাইত। শনিবার বিকেলে ঢাকা থেকে ফিরে সোমাকে ফোন করে নাইমের বাড়িতে নিয়ে ঘরের দরজা আটকে শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে।আত্মসমর্পণকারী আব্দুল¬াহ আল নাইম ওরফে শান্তর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, লাইকি অ্যাপস ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোমার অ্যাকাউন্ট ছিল। সোমা সেসব অ্যাকউন্টে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করত। এ নিয়ে স্বামী নাইমের সাথে তার
কোন্দল ছিল। শনিবার ঢাকা থেকে ফিরে সোমাকে ফোন করে। বিকেল তিনটার দিকে বাবার বাড়ি থেকে নাইমের বাড়িতে আসে সোমা। সেখানে সন্ধ্যার দিকে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সোমাকে হত্যা করে নাইম। নাইমের বাবা-মা ঢাকায় থাকায় বাড়িতে শুধু তারা দুজন ছিল। সোমার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল পুলিশের কাছে এমন অভিযোগও করেছেন তার স্বামী। বাগেরহাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, আমরা মরদেহ উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। হত্যাকারী আব্দুল¬াহ আল নাইম ওরফে শান্ত আমাদের হেফাজতে রয়েছেন। তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে হত্যার কারণ সম্পর্কে পুলিশকে জানিয়েছেন। এরপরও হত্যার সাথে অন্য কোন বিষয় জড়িত আছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি।