আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে গেছে করোনার ভারতীয় ধরন
লোকসমাজ ডেস্ক॥ দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪ জনের শরীরে ভারতীয় করোনার ধরন শনাক্ত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার এ কথা জানিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রী জুয়েল মিখাইজ এক বিবৃতিতে বলেন, গুতেং ও কাজালু-নাতাল প্রদেশে চার জনের শরীরে ভারতীয় করোনার ধরন বি.১.৬১৭.২ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবাই সম্প্রতি ভারত সফর করেছেন। ওই মহাদেশে এর আগে কেনিয়া, উগান্ডা ও মরক্কোয় ভারতীয় করোনার ধরন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা এ ক্ষেত্রে চতুর্থ দেশ। ভারতে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দেশটির করোনার ধরন বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ ভারতের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিলেও দক্ষিণ আফ্রিকা এখনো তা করেনি।
এ বিষয়ে কেবিনেটে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী। দক্ষিণ আফ্রিকায় এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৯০ হাজার লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৫৪ হাজার ৭০০-রও বেশি লোক। এ দিকে বাংলাদেশেও করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। সম্প্রতি ভারত থেকে ফেরা ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় প্রথমে তিনজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। পরে ওই তিনজনের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করলে দুজনের শরীরে ভারতের ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয় বলে জানানো হয় শনিবার। ভারতের নতুন ধরনের করোনা ভেরিয়েন্ট কোনোভাবেই যাতে বাংলাদেশে ছড়াতে না পারে, সে জন্য গত ২৬ এপ্রিল থেকে সীমান্ত ১৪ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ। গতকাল সীমান্ত বন্ধের সময়সীমা আরও ১৪ দিন বাড়ানো হয়েছে।

নাইজেরিয়ায় ৭ পুলিশ সদস্যকে হত্যা
লোকসমাজ ডেস্ক॥ নাইজেরিয়ার তেল সমৃদ্ধ অঞ্চল রিভার্স স্টেটে সাত পুলিশকে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা দক্ষিণাঞ্চলের একটি চেক পয়েন্টে হামলা চালিয়ে গুলি করতে করতে দুটি পুলিশ স্টেশনের দিকে এগিয়ে যায়। পুলিশ দুই হামলাকারীকে হত্যা করতে সক্ষম হয়। বাকিদের সন্ধানে অভিযান চলছে। কারা এই হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এর পেছনে রয়েছে। রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র নামদি ওমনি জানিয়েছেন, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা টয়োটা হিলাক্স ভ্যাট চালিয়ে চোবা ব্রিজের কাছাকাছি আসে। তারা অতর্কিতভাবে সেখানকার নিরাপত্তা চৌকিতে গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে দুজন কর্মকর্তা নিহত হন। তিনি আরও জানান, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা পার্শ্ববর্তী রুমুজি পুলিশ স্টেশনে ঢুকে পড়ে। সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে দু’জন কর্মকর্তাকে হত্যা করে। পরে তারা পুলিশের একটি টহল গাড়িতে হামলা চালা। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই বন্দুকধারী নিহত হয়। অন্যরা পালিয়ে কাছাকাছি অ্যালিম্ববু পুলিশ স্টেশনে হামলা করে আরও তিন কর্মকর্তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

শবে কদরেও জেরুজালেমে সংঘর্ষ
লোকসমাজ ডেস্ক॥ ইসরায়েল অধিকৃত এলাকা থেকে ‘সম্ভাব্য উচ্ছেদ’ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে আগের দিনের ধারাবাহিকতায় শবে কদরেও জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলমানদের কাছে পবিত্র রাতে সংঘর্ষস্থলের কাছেই আল-আকসা মসজিদে অনেকেই ‘ইবাদত-বন্দেগি’ করছিলেন।
সংঘর্ষের সময় ফিলিস্তিনি তরুণরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পাথর ছুড়তে থাকে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ইসরায়েলি দাঙ্গা পুলিশকে এসময় ঘোড়ায় চড়ে শব্দ বোমা ছুঁড়তে দেখা যায়। সেসঙ্গে জলকামানও ব্যবহার করা হয়। প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানায়, সংঘর্ষে শিশুসহ ৮০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে একবছর এবং ১৪ বছর বয়সী একটি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিজেদের একজন আহত হয়েছে ইসরায়েলি পুলিশের দাবি। ফিলিস্তিনি তরুণদের ধাওয়া করে ইসরায়েলি পুলিশের গুলি আর আগুনের ঝলকানি দেখিয়ে প্রাচীন নগরী দামাস্কাস গেইটের কাছে ২৭ বছর বয়সী মাহমুদ আল-মারবুয়া বলেন, “দেখুন তারা কীভাবে আমাদের গুলি করে, আমরা কীভাবে বাঁচব? “তারা চায় না আমরা প্রার্থনা করি। প্রতিদিনই সংঘাত হবে, প্রতিদিনই সংঘর্ষ বাঁধবে। প্রত্যেকটা দিনই এখানে সমস্যা থাকবেই।” জেরুজালেমে ইহুদি বসতি স্থাপন করা এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা হতে পারে- এই আশঙ্কায় কয়েকদিন ধরেই শহরটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সীমান্তে অবস্থান নিয়েছেন কয়েকশ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সেনাদের উদ্দেশ্য করে তারা জ্বলন্ত টায়ার ছুড়ে মারছে এবং বাজি ফুটাচ্ছে। গাজা থেকে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি রকেট খোলা জায়গায় পড়েছে বলেও তারা জানিয়েছে। গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস নেতা মুসা আবু মারজুক এক টুইটে বলেন, “আমরা আল-আকসার জনগণকে সম্মান জানাই, যারা ইহুদিরাষ্ট্রপন্থীদের ঔদ্ধত্যের বিরোধিতা করেছেন। সেইসাথে ফিলিস্তিনি জনসাধারণকে তাদের ভাইদের সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।” ইসরায়েল জানিয়েছে, আল-আকসা মসজিদ এলাকায় গত রাতের সংঘর্ষের কারণে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কায় জেরুজালেম, অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং গাজায় নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে। ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তেজনা দমন করতে দুই পক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতা করছে মিশর। শনিবারের সংঘাতের বিষয়টি শুক্রবারের চেয়ে কম আলোচিত হয়েছে বলেও জানান তিনি। শুক্রবার মুসলমান এবং ইহুদি দুই পক্ষেরই পবিত্র স্থান টেম্পল মাউন্ট প্লাজায় আল-আকসা মসজিদের কাছে পাথর ছুড়তে থাকা ফিলিস্তিনি তরুণদের ওপর রাবার বুলেট ছোড়ে ইসরায়েলি পুলিশ। শুক্রবারের এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০৫ জন ফিলিস্তুনি এবং ১৮ জন ইসরায়েলি কর্মকর্তা আহত হন। আন্তর্জাতিকভাবে এই ঘটনার নিন্দা করে শান্তির আহ্বান জানানো হয়।