“যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলা তুলে নিতেই আমার ননদ অপহরণের নাটক তৈরি করেছে”

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় যৌতুক মামলা হতে ভাই ও নিজেকে রক্ষায় বোন তার নিজ স্বামীকে আত্মগোপনে রেখে নিখোঁজ মামলার নাটক সাজিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন প্রিয়া খাতুন নামের এক নারী। শনিবার সকাল ১০ টার দিকে চৌগাছা রিপোর্টার্স ক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে প্রিয়া খাতুন বলেন, উপজেলার বর্ণি গ্রামের শামীম হোসেনের মেয়ে তিনি। ২০১৪ সালে পারিবারিক ভাবে তার বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের মৃত টিটো হোসেনের সাথে। সংসার জীবনে তারা ৫ বছরের এক পুত্র সন্তানের জনক-জননী। বিয়ের পর হতে স্বামী টিটো হোসেন বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন।
একপর্যায়ে আমার পিতা সংসারের সুখের কথা বিবেচনা করে জমি ক্রয় বাবদ দু দফায় ১ লাখ ৫০ হাজার ও ৮০ হাজার এবং মোটরসাইকেল কেনা বাবদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেয়। এরপর বেশ কিছু দিন বেশ ভালই চলে আমাদের দাম্পত্য জীবন। হঠাৎ করে ২০২০ সালের মে মাসে মাইক্রোবাস কেনার কথা বলে আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে স্বামী টিটো হোসেন, শাশুড়ি পারুল বেগম ও ননদ পারভিনা খাতুন মিলে আমাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমার পিতৃলয়ের লোকজন আমাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে যশোর চিফ জুডিসিয়াল আমলী আদালতে পারিবারিক সহিংসতা ও সুরক্ষা আইনে মামলা করি। মামলার পর আমার স্বামী পুনরায় আমাদের বাড়ি আসেন এবং মামলা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি মাইক্রোবাস কেনা বাবদ আবারও টাকা দাবি করেন। সেখানে কিছুটা বাকবিতন্ড হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে নানা হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যান। এ ঘটনার পর জুডিসিয়াল আমলী আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে আমি আরও একটি মামলা করি। এরপর থেকে আমার স্বামীর সাথে আমাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই। বর্তমানে আমার ছোট শিশু সন্তানকে নিয়ে আমি পিতৃলয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি। সম্প্রতি জানতে পারি আমার ননদ পারভীনা খাতুনের স্বামী উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের আজাদ হোসেন নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় ননদ আমাকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ঠ থানায়। নিখোঁজের ঘটনাটি একটি নাটক বলে আমি মনে করছি। কেননা আমার করা মামলা দুটি তুলে নিতে এর আগে তারা নানাভাবে হুমকি ও চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আমার পিতা প্রবাসী. আমার শ্বশুর বাড়ির সাথে সম্পর্ক ভাল থাকা অবস্থায় ননদ ও ননদায় আমাদের নিকট হতে বিভিন্ন সময়ে ৫০ হাজার টাকা নেন। এ ছাড়াও আমার জানামতে তিনি এলাকায় অন্তত ৫ লাখ টাকার বেশি দেনা আছেন। একদিকে দেনার ভয় অন্যদিকে আমার দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাকে চাপে রাখতেই এই অপহরণ নাটক করতে পারে। ঘটনাটি সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত কাহিনী উদঘাটনে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রিয়া খাতুনের মা পারুল বেগম, মামি কাকলী বেগম ও প্রিয়া খাতুনের শিশু সন্তান হুসাইন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে ননদ পারভীনা খাতুন বলেন, আমার ভাবি প্রিয়া খাতুন যে অভিযোগ করেছেন তার কোনো সত্যতা নেই। আমাদের ওপর প্রতিশোধ নিতেই তিনি পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে (আজাদ) অপহরণ করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।