মানসিক ভারসম্যহীন নারীর পাশে কেউ নেই! ৩ দিনেও মামলা হয়নি থানায়, অধরা নির্যাতনকারী চক্র

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কৃপালপুর-আবাইপুর মাঠে বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী (৪৫) উদ্ধারের ৩ দিনেও মামলা হয়নি থানায়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তার পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। দায় এড়িয়ে যাচ্ছে সবাই। পুলিশও বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। এদিকে এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার হোসেন মৃধা খবর পেয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। বর্তমানে সেই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। শৈলকুপা উপজেলা মহিলা বিষয়ক বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা খাতুন বলেন, করোনার কারণে অফিসে নিয়মিত বসা হচ্ছে না। সে কারণে আইনি সহায়তার বিষয়েও সহযোগিতা করতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বলেন, ওই নারী শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে। কেউ তার নাম বলতে পারেনি। তাকে আমরাই ওষুধ পত্র দিচ্ছি। তার অবস্থা আশংকাজনক। তবে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন হয়েছে কিনা পরীক্ষা করা হয়নি। আমরা তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেছি, কিন্তু তার লোকজন না থাকায় সে এখানেই রয়েছে পরীক্ষা করা হয়নি। তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। পরীক্ষার পরে নিশ্চিত হওয়া যাবে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা। শৈলকুপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, ওই নারী এখন শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। ফিজিক্যালি এসাল্ট হয়েছে। এই ঘটনায় কোন মামলা বা জিডি হয়নি এখনও পর্যন্ত। এই বিষয়ে ঝিনাইদহের সহকারী পুলিশ সুপার (শৈলকুপা সার্কেল) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ভিকটিমকে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে এটা নিশ্চিত। তবে রিপোর্ট না পেলে ধর্ষণ হয়েছে কিনা বলা যাবে না। আবাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার হোসেন মৃধা বলেন, বৃস্পতিবার সকালে আমি গ্রামের লোকজনের মুখে শুনলাম মাঠের মধ্যে একটা লাশ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে আমি দেখতে পেলাম বিবস্ত্র অবস্থায় ওই নারী পড়ে আছে। চোখের উপর কাটা দাগ, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন যায়গায় নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। পরে আমি কাপড় ঠিক করে ভ্যান ভাড়া করে হাসপাতালে বর্তি করি। তিনি বলেন, এই নারী ২/৩ বছর ধরে হাটফাজিলপুর বাজারে থাকতো। ভাষা অন্যরকম কেউ বুঝতে পারেনা। কোথা থেকে এসেছে কেউ বলতে পারেনা। এলাকাবাসী জানায় কৃপালপুর-আবাইপুর মাঠে নিয়মিত মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। ঘটনার আগের দিন রাতেও ওই অজ্ঞাত নারী আবাইপুর সংলগ্ন রাস্তায় ঘোরাফেরা করেছে। মাদকাসক্তদের লালাসার শিকার হলো কিনা তা তদন্ত করে দেখা দরকার।