ভ্যাকসিন না এলে টাকা ফেরত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ভ্যাকসিন দিতে না পারলে বাংলাদেশ টাকা ফেরত পাবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি জানিয়েছেন, ‘সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন আসবে কিনা সেটা তো আমরা জানি না। আমরা তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি। আমরা যখন চূড়ান্তভাবে জানতে পারবো যে ভ্যাকসিন আসবে না, তখন চূড়ান্তভাবে এটি নিয়ে কথা বলতে পারবো।’ বুধবার (৫ মে) দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
কোনও দেশ কোনও দেশের টাকা মেরে দেয় নাকি?
অর্থমন্ত্রী জানান, ‘ভ্যাকসিন না এলে অবশ্যই টাকা ফেরত পাবো। এভাবে কোনও দেশ কোনও দেশের টাকা মেরে দেয় নাকি? আমরা লিগ্যাল ডকুমেন্টের মাধ্যমে চুক্তি করেছি। এটা তো গোপন কোনও কাজ নয়। কাগজপত্রে লেখালেখি হয়েছে, ডকুমেন্টেশন হয়েছে। সুতরাং কন্ট্রাক্টচুয়্যাল ডিভিশন তাদেরও আছে আমাদেরও আছে। আমরা চেষ্টা করছি ভ্যাকসিন আনার জন্য। আমরা অন্যান্য সোর্সেও চেষ্টা করছি ভ্যাকসিনের জন্য।’
বিভিন্ন সোর্স থেকে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি
অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা একটা সোর্সের ওপর ডিপেন্ড করবো না। সেটি আমি আগেই বলেছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের মানুষের জীবন-মরণ নিয়ে প্রশ্ন। সুতরাং এখানে আমরা শুধু একটি সোর্সের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বসে থাকলে হবে না। তাই এর পাশাপাশি আরও বিভিন্ন সোর্স থেকে যারা ভ্যাকসিন তৈরি করে এবং যারা গ্রহণযোগ্য, যাদের ভ্যাকসিনে কোনও শঙ্কা নেই সেসব কোম্পানি থেকেও আমরা ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।’
সেরামের সঙ্গে চুক্তিতে ক্ষতিপূরণের সুযোগ রাখার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা এই মুহূর্তে বলতে পারবো না। আন্তর্জাতিক চুক্তিতে যেসব শর্ত থাকে সব শর্তই এই চুক্তিতে আছে। আমরা এখনই একদম ঘোষণায় চলে যেতে চাই না যে তাদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলাম সেই ভ্যাকসিন আসবে না। এমনটি আমরা বলিনি। তারাও এখনও বলেনি যে তারা দেবে না।’
অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার আবিষ্কৃত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত এই টিকা দেশে আনার বিষয়ে গত নভেম্বরে বাংলাদেশ সরকার, সেরাম ইনস্টিটিউট ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে তিন কোটি ডোজে টিকা বাংলাদেশের পাওয়ার কথা। তবে এখন পর্যন্ত ভারত সরকারের উপহার ও সেরামের দেওয়া টিকা মিলিয়ে এসেছে মোট এক কোটি দুই লাখ ডোজ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে চুক্তির ৩০ লাখ এবং মার্চ মাসের ৫০ লাখ এবং এপ্রিল মাসের ৫০ লাখ টিকাও দেশে আসেনি। অর্থাৎ চুক্তির এক কোটি ৩০ লাখ টিকা এখনও পায়নি বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে ভারত রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় টিকা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। আগামী কয়েকদিনে মধ্যেই দেশে টিকার মজুত ফুরিয়ে যাবে। দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। গত ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ।