চৌগাছায় শুকিয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ : জেলে পরিবারগুলোর দিন কাটছে অতি কষ্টে, অনেকে ভিন্ন পেশায়

0

এম. এ রহিম চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় কপোতাক্ষ নদ শুকিয়ে যাওয়ায় নদের তীরে বসবাসকারী জেলে পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে মাছ ধরা ছেড়ে চলে গেছেন ভিন্ন পেশায় । খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চৌগাছার বুক চিরে বয়ে চলা কপোতাক্ষ নদ পানিশূন্য হয়ে পড়ায় নদের তীরের তাহেরপুর, নিয়াতমপুর, নারায়নপুর, পেটভরা, হাজরাখানা, টেঙ্গুরপুর, দিঘলসিংহা, বড়কাবিলপুর, ছোটকাবিলপুর, মাশিরা, মশ্মপুর, ঢেকিপুতা, পৌর শহরের বেড়বাড়ী, পাচনানা, কংশারীপুর, তারনিবাস, চৌগাছা হালদারপাড়া, হুদা চৌগাছা ও উপজেলা পাড়া আদিববাসী পল্লীর বেশিরভাগ জেলেই জীবন-জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হয়েছেন। এরা বর্তমানে রাজমিস্ত্রির লেবার, কুলির কাজ, মাছের আড়তের কর্মচারী, মুরগীর দোকান, সেলুনে কাজ এমনকি রিকশা-ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। উপজেলা সদরের হালদার পাড়ার মনোহালদার নদে মাছ ধরে সংসার চালাতেন। কিন্তু নদে পানি না থাকায় তিনি এখন রাজমিস্ত্রীর কাজ করে সংসার চালান। জেলে হরেন হালদার কাজ করছেন সেলুনে। তার মতো পেশা বদল করেছেন রমেশ হালদার, গোবিন্দ, সোনাতন, নিমাই হালদার, অনিল হালদার, জগো হারদারসহ হালদার পল্লীর ৫০ জনের বেশি জেলে।
উপজেলা মৎস্য অধিদফতর সূত্র জানায়, চৌগাছায় জেলে পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। এর মধ্যে কার্ডধারী বা তালিকাভুক্ত জেলে ১ হাজার ২’শ ৩৭ জন। পৌরসভা এলাকায় ৩’শ জেলের মধ্যে ১’শ জনের কার্ড রয়েছে। চৌগাছা পৌর শহরের হালদার পাড়ার গোবিন্দ হাওলাদার বলেন, তিনি বাপ-দাদার পেশা এখনো ছাড়তে পারেননি। তাই এখন অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তার। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, বছরের দু’চার মাস কপোতাক্ষ নদে পানি থাকে। সে সময় মাছ ধরে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব হয়। বাকি মাসগুলোতে বেকার বসে থাকতে হয়। সরকারের কোনো সহায়তা তারা পান না। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘জেলেদের সমস্যার বিষয়টি আমরা জেনেছি। নদে পানি না থাকায় অনেক জেলে পরিবার কষ্টে আছে। সরকারি কোনো বরাদ্দ আসলে অবশ্যই তাদেরকে দেয়া হবে। নদ খননের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে। পানি ধরে রাখতে ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কপোতাক্ষ নদ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’