আগুনে সুন্দরবনের দুই একর জ্বলছে

0

আলী আকবর টুটুল, বাগেরহাট॥ সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লেগেছে। গতকাল দুপুরে আগুনের সূত্রপাত। অগ্নিকাণ্ডের সাথে সাথে মোরেলগঞ্জ ও শরণখেলা ফায়ার সার্ভিসের ২ টি ইউনিট, বন বিভাগ, সিপিজি সদস্য ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখেলা রেঞ্জের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, এলাকাবাসী বনের মধ্যে আগুনের ধোয়া দেখে আমাদের খবর দেয়। আমরা দ্রুত
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। সিপিজি সদস্য, গ্রামবাসী, বন বিভাগের ভোলা ও ধান সাগর ক্যাম্পের
সদস্যদের নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আনুমানিক দেড় থেকে দুই একর বন জুড়ে
আগুন জলছে। আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আগুনের চতুর্দিকে বেজ (ক্যানেল) কাটার
কাজ চলছে।
আব্দুল মান্নান আরও বলেন, প্রাকৃতিক কারণেই আগুন লেগেছে। সুন্দরবনের মধ্যে শুকনো
পাতার স্তুপ রয়েছে।
অতিরিক্ত তাপমাত্রায় প্রাকৃতিকভাবে এই আগুন ধরেছে বলে অভিমত এ কর্মকর্তার।
স্থানীয় সিপিজির টিম লিডার লুৎফর রহমান বলেন, সুন্দরবনে আগুন লাগলে বন বিভাগ ও
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আমরা আগুন নেভানোর কাজে অংশগ্রহন করি। এর আগেও
আমরা ১৫-২০জন সিপিজি সদস্য সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। আজও আমরা
আগুন নেভানোর কাজে অংশ গ্রহন করেছি। আশাকরি খুব দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে
পারবো।
সুন্দরবন সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান
আছাদুজ্জামান মিলন বলেন, সুন্দরবনে বার বার আগুন লাগার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।
আগুন লাগার ঘটনাগুলো স্পষ্টভাবে জানা যায় না। যখনই আগুন লাগে তখনই দায়সারা
গোছের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগুন লাগার মূল রহস্য উদঘাটন হওয়া জরুরি।
ভবিষ্যতে যাতে আগুন না লাগে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবন আমাদের মায়ের মত সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির কারণ আমাদের
জানার অধিকার রয়েছে। সুন্দরবনের এই অগ্নিকাণ্ড মানবসৃষ্ট কিনা তাও খতিয়ে দেখা
প্রয়োজন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, বাগেরহাটের উপসহকারী পরিচালক মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ স্টেশনের ২০জন সদস্য কাজ করছে। আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য ওই এলাকায় ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে। পানির উৎস্য পাওয়া গেছে। আশাকরি অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকায় অল্পকিছু জায়গায় আগুন ধরেছে। যে এলাকায় আগুন ধরেছে ওই এলাকায় সুন্দরী গাছের পরিমান কম। ফায়ার সার্ভিস ও বন কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ও আগুন লাগার কারণ জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকার চার শতক বনভূমি পুড়ে যায়।