যশোরে ব্যবসায়ী অপহরণ ও চাঁদাবজি :আটক হননি পুলিশ কর্মকর্তা খলিলুর, কর্মস্থলেও অনুপস্থিত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে ব্যবসায়ী বিল্লাল খাঁ অপহরণ ও চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত পুলিশের এএসআই খলিলুর রহমান আত্মগোপন করে রয়েছেন। গত দেড় মাসেও তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। কর্মস্থল ও বাড়িতে অভিযান চালিয়েও পুলিশ তার হদিস পায়নি। সহযোগীদের ধরা পড়ার খবর জানতে পেরে এএসআই খলিলুর রহমান পালিয়ে গেছেন এমনটা মনে করছে পুলিশ। তবে তাকে আটকের জন্য চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. তাজুল ইসলাম।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ইট-বালি ব্যবসায়ী বিল্লাল খাঁ’কে গত ১৪ মার্চ সকালে নিজ এলাকা থেকে অপহরণ করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায় একটি চক্র। গাড়িতে তাকে মারপিট করা হয়, পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন চক্রের সদস্যরা। পরে অপহরণকারী তার স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা নেওয়ার পর তাকে গোপালগঞ্জের মকসেদপুর এলাকায় নামিয়ে দেন। বাড়ি ফিরে আসার পর বিল্লাল খাঁ গত ১৮ মার্চ দু’জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। আসামিরা হলেন, রেলগেট পশ্চিমপাড়ার মৃত মোহাম্মদ সরদারের ছেলে আব্দুস সাত্তার (৫০) ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সারশাকান্দি গ্রামের আব্দুর রহমান খাঁন সালামের ছেলে হাবিবুর রহমান ওরফে শাওন। মামলা দায়েরের পর তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই শংকর কুমার বিশ্বাস অভিযান চালিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে এজাহারভুক্ত আসামি আব্দুস সাত্তার ও হাবিবুর রহমান শাওন ছাড়াও ঘটনার সাথে জড়িত আব্দুর রহমান খান সালাম নামে আরেক ব্যক্তিকে আটক করেন। আব্দুর রহমান খান সালাম সম্পর্কে শাওনের পিতা। গত ২৫ মার্চ আটক ৩ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে এর মধ্যে আব্দুর রহমান খান সালাম ও হাবিবুর রহমান শাওন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তাদের জবানবন্দি থেকে প্রকাশ পায় যে, টাকা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিল্লাল খাঁ’কে অপহরণ করে জব্দ করার জন্য পূর্ব পরিচিত এএসআই খলিলুর রহমানের সাহায্য চেয়েছিলেন আব্দুস সাত্তার। এ কারণে এএসআই খলিলুর রহমান পূর্ব পরিচিত ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার ‘শাওন এন্টারপ্রাইজ’র মালিক গাড়ি ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান খান সালাম ও তার ছেলে হাবিবুর রহমান শাওনকে নিয়ে যশোরে আসেন। পরে তারা বিল্লাল খাঁ’কে অপহরণ করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যান। গাড়ির ভেতরে বসে বিল্লাল খাঁ’কে মারপিট এবং পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা পেয়ে তাকে গোপালগঞ্জের মকসেদপুরে নামিয়ে দেন অপহরণকারীরা। তবে অপহরণ ঘটনায় জড়িত আব্দুস সাত্তার, আব্দুর রহমান খান সালাম ও হাবিবুর রহমান শাওন পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। এ খবর জানতে পেরে আত্মগোপন করেন এএসআই খলিলুর রহমান। এখনো পর্যন্ত তাকে আটক করা যায়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শংকর কুমার বিশ্বাসকে মোবাইল ফোন করা হলে তিনি রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য জানা যায়নি। কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. তাজুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, তাকে (এএসআই খলিলুর রহমান) আটকের জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তার ইউনিটে (ট্যুরিস্ট পুলিশ) অনুপস্থিত রয়েছেন। ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার বাড়িতেও তাকে পাওয়া যায়নি।