লোহাগড়া (নড়াইল) সংবাদদাতা ॥ নড়াইল-কালনাঘাট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পানিশূন্য মরা খালটি এখন মানুষের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। এই খালটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। সেখানে মার্কেট নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নড়াইল-কালনাঘাট সড়ক নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে সড়কের পাশে মাটি কাটায় একটি খালের সৃষ্টি হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্যে বর্তমান সরকার সড়কটিকে মহাসড়কে রূপান্তরিত করে। পদ্মা সেতু, কালনা সেতুর সাথেই মহাসড়কটি সংযুক্ত। এখানে দুই লেন থেকে উন্নীত হয়ে ৬ লেনের রাস্তা হওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকা-কালনা-নড়াইল-বেনাপোল মহাসড়ক এটি। সেতুর কাজ সমাপ্ত হলে এলাকায় ব্যবসার প্রসার ঘটবে ।
এই খালটি প্রায় সারা বছরই পানিশূন্য থাকে। নদীর সাথে কোন সংযোগ না থাকায় বৃষ্টির পানিই মূলত ভরসা। বৃষ্টির পানির কারণে বছরের ৩/৪ মাস এ খালে সামান্য পানি থাকে। মহাসড়কের পাশে খালের অবস্থান থাকাটা রাস্তার স্থায়ীত্বের জন্য বড় বাধা। তাছাড়া মাঝে মাঝে মহাসড়ক থেকে যানবাহন ছিটকে খালে পড়ে বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে। খালের অল্প পানিতে মশার জন্ম হয়। সাধারণ মানুষ রাস্তার পাশের খালে ময়লা আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। পথচারী বা যানবাহনের আরোহীদের বিষাক্ত বাতাস যেন জীবন দুর্বিসহ করে তোলে।
মহাসড়কের পাশের জমিতে যেখানে খালটি সৃষ্টি হয়েছে সেই খালটি ভরাট করলে সেখানে বড় মার্কেট গড়ে তোলা সম্ভব। ফলে হাজার হাজার বেকার মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করে চলতে পারবে। খালের ওপারের বাসিন্দারা চলাচলে বাধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। খাল থাকার কারণে কেউই বড় যানবাহনে করে মালামাল বহন করতে পারেন না। তাছাড়া মরা এই খালের কারণে ওপারের জমিতে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে নানা কারণে খালটি এখন মানুষের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ বোরহান উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, মরা খাল থাকায় মূল মহাসড়ক থেকে যানবাহনে করে খালের ওপারে মালামাল নেয়া অসম্ভব। তাই খালের ওপারে শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে না। কর্তৃপক্ষের উচিত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া।
লক্ষীপাশা গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী ও শরিফুজ্জামান বলেন, বর্তমানে নবগঙ্গা নদী খনন করা হচ্ছে। নদীর দুপাড়ে প্রচুর মাটি মজুদ হচ্ছে। নবগঙ্গার মাটি এমনিতেই হরিলুট হচ্ছে। নবগঙ্গার মাটি দিয়ে খালটি ভরাট করতে পারলে সেখানে মার্কেট গড়ে তুললে এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ বুলবুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মরা এ খালটির প্রয়োজনীয়তা নেই। বরং মহাসড়কের জন্য এটি হুমকি।
পথচারী মাসুদ, সেলিম, মামুন বলেন, খালপাড়ের বাসিন্দারাসহ স্থানীয়রা মরা এ খালের মধ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলে। তাই মারাত্মক দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে বা যানবাহনে চলাচলের সময় নাক বন্ধ করে যেতে হয়। খালটি ভরাট করে কর্তৃপক্ষের কাছে মার্কেট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
লক্ষীপাশা ভূমি অফিসের নায়েব (ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা) হায়দার আলী জানান, মরা এই খালটির জমির মালিক সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিছু করার এখতিয়ার তাদের নেই।
স্থানীয়রা জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী মরা এই খালটি বন্ধে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেছে