ছিনিয়ে নেওয়া রিভলবার উদ্ধার লোহাগড়ায় দু’পক্ষে সংঘর্ষ চলাকালে হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত

0

শিমুল হাসান, লোহাগড়া (নড়াইল) ॥ নড়াইল লোহাগড়ার কুমড়ি গ্রামে দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলাকালে হামলার শিকার হয়েছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এসময় দুবর্ৃৃত্তরা এক পুলিশ কর্মকর্তার সরকারি রিভলবার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যদিও দু’ঘণ্টা পর আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার হয়েছে। আহত পুলিশ কর্মকর্তারা বর্তমানে লোহাগড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুমড়ি-মাউলি-দিঘলিয়া এলাকায় দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কুমড়ি পূর্বপাড়ার সরদার ওহিদুর রহমান নেতৃত্বাধীন টুকু কটা, ইসলাম মোল্যা, জালাল মোল্যা গ্রুপের সাথে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চরমাউলি গ্রামের রোকন উদ্দিন মোল্যা ও লুটিয়ার ফিরোজ মেম্বারের নেতৃত্বাধীন গ্রুপের বিরোধ চলছিল। সরদার ওহিদুর রহমান নেতৃত্বাধীন গ্রুপের লোকজন লুটিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। অসহায় লোকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করতো তারা। ওই গ্রুপের লোকদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে চরমাউলী, মাটিয়াডাঙ্গা, খালচর, গাজিপুর, লুটিয়াসহ পাঁচ গ্রামের মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে পঞ্চপল্লী নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। পঞ্চপল্লী গ্রুপের সদস্য চরমাউলি গ্রামের ইকবাল ও রব্বানী গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিল থেকে ধান কেটে বাড়ি ফিরছিলেন। তাদের দুজনকে মারপিটের জন্য সরদার ওহিদুর রহমান নেতৃত্বাধীন গ্রুপের লোকজন রামদা, ছ্যানদা, লাঠিসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিলের মধ্যে প্রবেশ করে। গ্রামের মহিলারা বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে পঞ্চপল্লী গ্রুপের সদস্যরাও টের পেয়ে পাল্টা জবাব দিতে সেখানে চলে আসে। ফলে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশের এএসআই মীর আলমগীর হোসেন এবং এএসআই মিকাইল কুমড়ি পূর্বপাড়াস্থ টিকেরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে প্রবেশ করেন। এএসআই মীর আলমগীর এসময় সরদার ওহিদুর রহমান গ্রুপের সনি সরদারকে ধরে ফেলেন। এরপরই সরদার ওহিদুর রহমান গ্রুপের পলাশ সরদার, আজগার মোল্যা, সাদ্দাম কটা, সাজ্জাদ কটা, আজাদ কটাসহ ২৫/৩০ জন তাকে (মীর আলমগীর) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে সনি সরদারকে ছিনিয়ে নেয়। তারা এএসআই মিকাইলকেও পিটিয়ে আহত করে। দুর্বৃত্তরা মারপিটের সময় এএসআই মীর আলমগীর হোসেনের সরকারি পিস্তল কেড়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে খোয়া যাওয়ার দু’ঘন্টা পর পুলিশ মাউলী সড়কের পাশ থেকে ওই পিস্তলটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সরদার ওহিদুর রহমান গ্রুপের সদস্যরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া যায়নি। ঘটনার পরই কুমড়ি এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
লোহাগড়া থানা পুলিশের ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, সরদার ওহিদুর রহমানের গ্রুপের লোকজন হামলা চালিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের জখম করেছে এবং তারা অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। পরে ছিনিয়ে নেয়া অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। দোষীদের আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।