আরও এক সপ্তাহ ‘কঠোর লকডাউনের’ সুপারিশ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥করোনা সংক্রমণরোধে আরও এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করেছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। ওই এক সপ্তাহের লকডাউন শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে ফের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।
রবিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩১তম সভায় লকডাউন বাড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকে। মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ তীব্র হয়। সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম দফায় সাত দিনের ‘লকডাউন’ শুরু হয়। ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চলার পর ১৪ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় দফার কঠোর লকডাউন দেয় সরকার। যা এখন চলছে। এরই মধ্যে রবিবার রাতের ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করা হলো। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা। সারাদেশে কোভিড-১৯ এর উচ্চ সংক্রমণ ও ক্রমবর্ধমান মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়েছে কমিটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন সুপারিশ করেছিল। সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লক ডাউন ঘোষণা করায় কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করে।
সংবাদ বিজ্ঞপিতে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলেন, বৈজ্ঞানিকভাবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায় না।
“দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টি কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারি দফতর, ব্যাংক খোলা রাখা, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে।”
লকডাউনের সময় স্বাস্থ্যসেবা, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। খোলা রাখা যাবে এমন জরুরি সেবার তালিকা প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে কমিটি। এছাড়া কাঁচা বাজার আবারও উন্মুক্তস্থানে বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় কমিটি।
“অন্যথায় বিরূপ পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া চলমান লকডাউনে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে,”-সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে দৈনিক আক্রান্ত এবং মৃত্যু রেকর্ড হচ্ছে। করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৩৮৫ জনের। এরমধ্যে ১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেড় মাসের কিছু বেশি সময়েই মারা গেছেন এক হাজার ৯৭৭ জন। গত তিন দিন ধরে দৈনিক ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। রবিবারও করোনাভাইরাসে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এছাড়া এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সাত লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জন। এরমধ্যে ১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এক লাখ ৭২ হাজার ৭৩৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজার ৬২৬ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড।