মোরেলগঞ্জে নির্বাচনি সহিংসতায় আহত ২৭

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও হামলায় অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ জনকে খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় এবং বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাতে এবং শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী, হোগলাবুনিয়া ও বনগ্রাম ইউনিয়নে পৃথকভাবে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। তেলিগাতী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার রাতে তেলিগাতী বাজারের পাশে সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হাওলাদারের বাড়ির সামনে আমার নির্বাচনী অফিসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। এসময় নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লোকজন এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের ধারালো অস্ত্র ও লাঠির আঘাতে পিকলু সরদার, রোমেন শেখ, সরোয়ার শেখ, হান্নান শেখ ও লুৎফার হাওলাদার গুরুত্বর আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। যারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোরশেদা বেগম বলেন, ‘রাতে তেলিগাতী বাজারে নির্বাচনী অফিসে কর্মীদের মাঝে প্রচারণার পোস্টার বিতরণ করি। পরে তারা মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিল। পথে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওঁৎ পেতে থাকা আনারস প্রতীকের প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায় ও পোস্টার খালে ফেলে দেয়। তাদের হামলায় হালিম খান, মনি খান, উজ্জল, সেলিম ও মনি শেখ আহত হয়। এদেরকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ৫-৬ জন কর্মী আহত হয়েছে।’ এদিকে শনিবার দুপুরে হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের চরহোগলাবুনিয়া আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে আনারস প্রতীকের পোস্টার লাগানোর সময় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. আকরামুজ্জামানের সমর্থকদের হামলায় তিন জন আহত হয় বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হাসান পলাশ। তিনি বলেন, ‘আহত ফেরদাউস নামের একজনকে পিরোজপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ছানা উল্লাহ ও আলাউদ্দিন আলো হাওলাদার নামের ৯০ বছরের এক বৃদ্ধকে মারধর করেছে আকরামুজ্জামানের সমর্থকরা।’ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আকরামুজ্জামান বলেন, ‘এসব ফাও কথা। প‌্যানিক সৃষ্টি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তারা।’ অপরদিকে শুক্রবার রাতে বনগ্রাম ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল জব্বার মোল্লার বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রিপন দাসের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এসময় আব্দুল জব্বার মোল্লার নির্বাচনী অফিসের আসবাবপত্র ভাংচুর ও তিন কর্মী আহত হয়। তবে পাল্টা অভিযোগ করে রিপন দাস বলেন, ‘পথসভা করে ফেরার পথে আব্দুল জব্বার মোল্লার কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায় এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।’ বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচনী সহিংসতার কয়েকটি খবর আমরা পেয়েছি। সবগুলো ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’