আমি আতঙ্কিত নই, আরো উজ্জীবিত হচ্ছি : কাদের মির্জা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, তার ‘সত্য বচনের’ পর আস্তে আস্তে অনেকেই তার কাছ থেকে সরে গেছে। এজন্য তিনি আতঙ্কিত নন, তিনি আরো উজ্জীবিত হচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে অনেকভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘আজকে আল্লাহ আর আমার দলের কিছু ত্যাগী নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ ছাড়া কেউ আমার সাথে নেই। আমার সত্য বচনের পর আস্তে আস্তে অনেকেই আমার কাছ থেকে সরে গেছে। এজন্য আমি আতঙ্কিত নই, আমি আরো উজ্জীবিত হচ্ছি। আজকে যারা অপরাজনীতির সাথে জড়িত। যারা এখানে টেন্ডারবাজি করেছে, যারা মানুষের গরীব, নিরীহ, ভূমিহীনদের সম্পত্তি দখল করেছে। যারা আজকে সরকারি জায়গা দখল করেছে। সরকারি খাল দখল করেছে। তোয়া বাজার কখনো ইজারা যায় না। তারা আজকে প্রশাসনের সহযোগিতায় তোয়া বাজার দখল করেছে। তারা আজকে কেউ আমার সাথে নেই। সব শিয়ালের এক ডাক। ঢাকা থেকে আরম্ভ করে আমার এলাকা পর্যন্ত। আজকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত চলছে অনেকভাবে।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমি এমন নেতা, যে ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর কৌঁসুলী হিসেবে কাজ করেছে। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর একটা স্বাধীন দেশে যে সংবিধান রচিত হয়েছে, সে সংবিধান প্রণয়নের সাথে জড়িত ছিল। যে মানুষটি বলেছে, শেখ মুজিবুর রহমান যদি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর ফিরে না আসতো তাহলে ভারতীয় মিত্র বাহিনী কখনো ভারতে ফিরে যেত না।’ তিনি বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতীয় ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। সে মানুষটি মৃত্যুবরণ করেছে। মৃত্যুর পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা- এটা আমার মনে হয় আল্লাহও অসন্তুষ্ট হবে। সে কাজটি কে বা কারা করেছে প্রশাসনের মাধ্যমে আপনারা খবর নিবেন। এ সংস্কৃতি যদি বাংলাদেশে চলতে থাকে, তাহলে বঙ্গবন্ধু কি স্বাধীনতা এ জন্য দিয়েছে? অপরাজনীতি, দুর্নীতি, ভোট চুরি এগুলোর জন্য কি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনেছে। কথা বলতে হবে সবাইকে, শুরু হয়েছে, তরুণদের মধ্যে আজকে চেতনা সৃষ্টি হয়েছে। আমি যে ষড়যন্ত্রের কথা বলেছি, সে দিন থেকে মওদুদ সাহেবের শোকসভা করার সিন্ধান্ত নিয়েছি, সেটা বন্ধ করেছে। সে দিন থেকে পুলিশি তাণ্ডব এখানে চলছে। আমার চতুর্দিক আজকে ঘেরাও করে রেখেছে।’
কাদের মির্জা আরো বলেন, ‘আমি বিশস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি, গত পার্লামেন্ট নির্বাচনে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে যেভাবে রাতের অন্ধকারে তার বাসা থেকে জোর করে সিএমএইচ নিয়ে গেছে। অনুরূপ কিছু করার জন্য, আজকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ওবায়দুল কাদের সাহেব, ওনার স্ত্রীর প্ররোচনায়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি দেশবাসীকে জানিয়ে যাচ্ছি, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে আমি আত্মহত্যা করব। আমার উপর যদি ঘটাতে চায় তাহলে আমি বলে দিচ্ছি আত্মহত্যা করব। আমি কোনো অসত্যের কাছে মাথানত করবো না। কি করবেন? মেরে ফেলবেন, জেলে দিবেন, লাঞ্ছিত করবেন, আর কি বাকি আছে?’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘দুই হাজার গুলি একতরফা আমার পৌরসভাতে আমার বিরুদ্ধে করেছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার লেলিয়ে দেয়া ফেনীর নিজাম হাজারী, নোয়াখালীর একরাম চৌধুরী, বাদলের নেতৃত্বে এখানকার সমস্ত জাসদ, জাসদের যারা আমার ভাই কামালকে হত্যা করেছে, আমার ভাই জামালকে গুলি করেছে, আমার মামা এমদাদ সাহেবকে গুলি করেছে, আমাদের নুরনবী মাস্টারকে গুলি করেছে তাদের নিয়ে দুই হাজার গুলি আমার পৌরসভাতে একতরফা করেছে। আর একটা থানা থেকে করা হয়েছে পুলিশ এসল্ট মামলা। সে মামলার আসামিও আমার দলের কর্মী। এ পর্যন্ত যতগুলো মামলা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে হয়েছে, আমার কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়েছে।’ কাদের মির্জা বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আসলে আমাকে কেউ পছন্দ করছে না, আমি সত্য কথা বলাতে, এটাই হচ্ছে আসল কথা। কি করবেন করেন, যা করার করবেন দেরি করছেন কেন। ওবায়দুল কাদের এবং তার স্ত্রী প্রশাসনকে বলে দিয়েছেন, তার সাথে যেন চতুর্দিকে একটা লোক না থাকে, সে ব্যবস্থা করো। সে ব্যবস্থার অংশ হিসেবে আজকে তারা জামিন নিয়ে এসে সব এলাকাতে আমার ছেলেদেরকে হুমকি দিচ্ছে, গালিগালাজ করছে তারপর জেলে ঢুকিয়ে দিবে পুলিশের ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশ গিয়ে তদন্তের নামে টাকা নিচ্ছে। এটা কি দেশ, আইন কোথায় গিয়েছে। আজকে কি বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা নেই? বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা আজকে কোথায়? এটা আমি প্রশ্ন করতে চাই। বাদলইল্যা পোলারে গ্রেফতার করছে এটা হলো আইওয়াশ ওবায়দুল কাদেরের। গত পরশুদিন একরাম চৌধুরী আর টেন্ডারবাজ জেহান কারাগারে গিয়ে বাদলের সাথে দেখা করে আমার হত্যার নতুন চক নির্মাণ করেছে।’