বিসিবি নিয়ে সমালোচনায় দুই মহানায়ক

0

 বিসিবি কর্তাদের বিদেশ সফর নিয়ে মাশরাফীর প্রশ্ন
লোকসমাজ ডেস্ক॥ আকরাম খানদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সাকিব আল হাসানের মন্তব্যে যখন টালমাটাল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, তখন মঞ্চে হাজির মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। বিসিবি কর্তাদের বিদেশ সফর, অফিস করা না করা, তাকে বাদ দেয়া নিয়ে ‘মিথ্যা যুক্তিসহ’ নানা বিষয়ে মুখ খুলেছেন দেশের সফলতম এই অধিনায়ক। বেসরকারি টেলিভিশন ৭১ টিভির খেলাযোগ অনুষ্ঠানে মাশরাফী এসব বিষয়ে কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির একটি প্রোমো অনলাইনে এসেছে । শহরের একটি রেস্টুরেন্টে বসে দেয়া সাাৎকারে মাশরাফীকে এভাবে কথা বলতে দেখা গেছে, ‘যে মানুষগুলো কথা বলতেছে, ওদের অবদান কী? অবদানগুলো যদি আমি তুলে ধরি, সেইটা তো খারাপ হয়ে যাবে।’ ‘একটা ওয়ার্ল্ডকাপে ৫০ জন যাচ্ছেন।

মাশরাফীর চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করবেন, কেউ কি নিজের টাকায় গেছে নাকি, একটু শোনেন তো।’ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘ফিটনেস ইস্যুতে মাশরাফীকে হয়তোবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে রাখা হবে না।’ এ বিষয়ে মাশরাফীর মন্তব্য জানতে চাইলে উত্তরে বলেন, ‘ডেটাগুলো একটু বের করে দেখেন, আমার একটা ফিটনেস টেস্ট ফেল আছে কি না। আমি তো এগুলো ক্যামেরার সামনে এসে বলিই নাই।’ মাশরাফী বলেন, ‘খুবই অবাক লাগে। এনারা কি কোনো তথ্য রাখেন, বা আদৌ অফিস করেন।’ মাশরাফী দাবি করেন, তাকে বাদ দেয়ার সময় কোনো আলোচনাই তার সঙ্গে করা হয়নি। অথচ বিসিবি বলছে, আলোচনা হয়েছে। ‘কিছুটা সত্য কথা আমি আশা করেছিলাম। এক কাফ কফির অফার দিয়ে রেখেছিল (রাসেল ডমিঙ্গো), আম স্টিল ওয়েটিং।’ বিসিবি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে মাশরাফী বলেন, ‘যেটা সত্য সেটা বলেন। আপনি মাশরাফীকে বাদ দিছেন, সেটাই যথেষ্ট।’

যা ঠিক মনে করি, বলে দিয়েছি: সাকিব
লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং তার কর্মকর্তাদের নিয়ে করা মন্তব্য নিয়ে কোনো অনুতাপ নেই সাকিব আল হাসানের। আরেকটি সাাৎকারে বলেছেন, কথায় কথায় প্রসঙ্গ এসেছে, যা ঠিক মনে করেন বলে দিয়েছেন। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্রকে রবিবার রাতে দীর্ঘ সাাৎকার দিয়েছেন সাকিব। উৎপলের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে সেই সাাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে। ‘আমি প্ল্যান করে কিছু বলি না। যা মনে আসে, তা-ই বলি। যা বিশ্বাস করি, তা-ই বলি,’ মন্তব্য করে সাকিব বলেন, ‘যা ঠিক মনে করি, বলে দিয়েছি।’ এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে সেই ভাবনাও সাকিবের মনে আসেনি, ‘কী প্রতিক্রিয়া হবে, এ নিয়ে ভাবি না। আমি চিন্তা করলে বড় চিন্তা করি। আচ্ছা আপনিই বলেন, আমি যা বলেছি, তাতে কি আমার নিজের কোনো লাভ আছে? নিজের লাভ তো গাধাও বোঝে। আমি ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থে কথাগুলো বলেছি। কারও যখন বলার সাহস নাই, আমিই না হয় বললাম। আমার ব্যক্তিগত লাভের জন্য তো বলি নাই। কেউ যদি এটা ভালোভাবে নিতে চায়, তা ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে। আমরা যদি ভালো করতে চাই, বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতি চাই, তাহলে তো আমি আমার কথায় কোনো সমস্যা দেখি না।’
আলাপে উৎপল শুভ্র সাকিব ইস্যুর প্রায় প্রতিটি দিক নিয়ে কথা বলেছেন। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার ইচ্ছা করে এমন বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন কি না, যাতে বিসিবি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়। তখন রাগ করে বাংলাদেশের পে খেলা ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হতে পারেন। এ বিষয়ে সাকিবের উত্তর এমন, ‘তাই নাকি? এমন কথা হচ্ছে নাকি! কারও মনে যদি এমন চিন্তা এসে থাকে, তবে তা ভুল চিন্তা।’ এদিকে, বাংলাদেশের ক্রিকেটে আলোচনার ঝড় তুলে দিয়ে সাকিব আল হাসান যুক্তরাষ্ট্রে বেশ ‘মজায়’ রয়েছেন। ‘যা ঠিক মনে করি, বলে দিয়েছি’ মন্তব্যের পর নিজের ভেরিফাইড ফেইসবুকে খাবারের ছবি দিয়ে রসিকতা করেছেন। গতকাল সোমবার সাকিব লিখেছেন, ‘ইদানীং যা-ই খাচ্ছি সবই মজা লাগছে! কেনো বলুন তো?’ বোর্ডের সঙ্গে রীতিমতো মুখোমুখি অবস্থানে গিয়েও সাকিবের মনে যে কোনো ‘ভয় নেই’-এই পোস্টকে অনেকেই সেই প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত বলে মনে করছেন। ফেইসবুকে সাকিবকে অনুসরণ করা এক ব্যবহারকারী পোস্টের নিচে এভাবে মন্তব্য করেছেন, ‘মজা হওয়ার কারণ একটাই, আপনি যা বলেন সোজাসাপ্টা।’ সাকিব সম্প্রতি একটি সাাৎকারে বোর্ডের কয়েক জন কর্মকর্তার ‘দায়িত্বের প্রতি অবহেলা’ নিয়ে মন্তব্য করেন। এরপর বোর্ড থেকে জরুরি সভা ডেকে তার আইপিএল খেলার অনুমতি বাতিলের ইঙ্গিত দেয়া হয়।