যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল : নারী সহকর্মীদের নানান কুপ্রস্তাবে উত্ত্যক্তের অভিযোগ তিন কর্মচারীর বিরুদ্ধে

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির একাধিক কর্মচারীর বিরুদ্ধে কর্মরত নারীদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের জমাদ্দার ইমরান হোসেন, ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার হারুন-অর-রশিদ ও নৈশ প্রহরী শরিফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। তাদের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়ে কেউ কেউ হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন বলে কর্মরত কয়েকজন নারী জানান।
যশোরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ১৭ জন নারী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কর্মরত আছেন। তারা আয়া, কিনার, ওয়ার্ডবয়ের দায়িত্ব পালন করেন। অন্যান্য কর্মচারীদের মতো প্রতিদিন তাদের আট ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাদের মধ্যে সুশ্রী নারীদের প্রতি কুনজর পড়ে ইমরান হোসেন, হারুন-অর-রশিদ ও শরিফুল ইসলামের। ভুক্তভোগী একাধিক নারীর অভিযোগ যোগদানের শুরু থেকেই তারা বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। বিশেষ করে দুই জমাদ্দার ইমরান হোসেন ও হারুন-অর-রশিদের অধীনে দায়িত্ব বণ্টন হওয়ার সুযোগে তারা এসব নারী কর্মচারীকে উত্ত্যক্ত করেন। ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের সাথে সময় দিতে হবে, কাজ শেষে ঘুরতে যেতে হবে, বাসায় যেতে হবেসহ যৌন হয়রানিমূলক কথা বলতেও তারা দ্বিধাবোধ করেন না। তারা আরও জানান, ইমরান ও হারুন এমন কথা বলেই খ্যান্ত হন না, তারা বলেন, আমাদের সন্তুষ্ট করো, আমরা তোমাদের দেখবো। সন্তুষ্ট না করলে আমাদের ইচ্ছামতো চলতে হবে, যে কাজ দেব, সেই কাজ করতে হবে। ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, অল্প বয়সে স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই মেয়ের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্যে হাসপাতালে কাজ করি। কোনো বেতন ভাতা না থাকায় রোগীর স্বজনরা যা দিত তাই দিয়ে চলতো। কিন্তু ইমরান ও হারুনের খায়েশ পূরণ করতে না পেরে হাসপাতালের কাজ বাদ দিয়ে অন্য কাজ করছি। আমার মত অনেকই আছেন যারা চু লজ্জার ভয়ে এ কাজ ছেড়ে অন্য কাজ করছেন। বর্তমানে কর্মরত অপর এক নারী বলেন, স্বামী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী। তার ওষুধ ও একমাত্র ছোট ছেলের মুখে খাবার তুলে দিতে আমি এই কাজে যোগদান করি। কিন্তু ইমরানের কুপ্রস্তাবের কারণে আমি কাজ ছেড়ে দিচ্ছি। আগামী মাস থেকে একটি কিনিকে কাজ করবো। আরেক ভুক্তভোগী নারী বলেন, যোগদানের প্রথম থেকে ইমরান ও হারুন দিনের বেলায় ইঙ্গিতে অনেক অনৈতিক কথা বলে আসছেন। আবার রাতের বেলায় নৈশ প্রহরী শরিফুল ইসলামও একই ধরনের কথা বলেন। ভুক্তভোগীরা এসব অভিযোগ হাসপাতালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বলেছেন এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমি পাইনি। পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। অভিযুক্ত জমাদ্দার ইমরান হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ওয়ার্ডে কাজ না দেয়ায় এমন অভিযোগ করছে। ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার হারুন-অর-রশিদ ও নৈশপ্রহরী শরিফুল ইসলামও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।