সাকিবের অভিযোগের বিপরীতে শক্ত প্রমাণ দুর্জয়ের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সাকিব আল হাসানের অভিযোগের তীর তাদের দিকে। কিন্তু তারা প্রায় সারাদিনই মুখ বন্ধ করে ছিলেন। অথচ সেই সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি অগণিত ফোনকল পেয়েছেন জাতীয় দলের দুই সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান ও নাইমুর রহমান দুর্জয়। সাংবাদিকদের ফোন পেয়ে ব্যক্তিগতভাবে কিছু কথা বললেও আনুষ্ঠানিকভাবে সাকিবের অভিযোগ খণ্ডন করে কোন আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেননি বোর্ডের এ দুই শীর্ষ পরিচালক। শুধু বলেছেন, এমনিতে কোন বক্তব্য নয়। আনুষ্ঠানিকভাবেই জানানো হবে সবকিছু। তবে শেষপর্যন্ত তারা আর নিরব থাকেননি। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের গুলশানের বাসায় অনির্ধারিত জরুরি বৈঠক শেষে ঠিকই মিডিয়ার সামনে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তবে দুজন দুভাবে। ক্রিকেট অপস চেয়ারম্যান আকরাম খান সাকিবের আইপিএল খেলার অনুমতিপত্র পুনঃবিবেচনার কথা বলেছেন। আর নাইমুর রহমান দুর্জয় কথা বলেছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন আদলে।
নাইমুর রহমান দুর্জয় বোর্ডের যে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান, সেই হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের কার্যকরিতা ও প্লেয়ার তৈরি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাকিব। ঠিক এ বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন দুর্জয়। তার ব্যাখ্যা, ‘খালি চোখে মনে হচ্ছে সাকিব বুঝি আকরাম ভাই আর আমার বিপক্ষে কথা বলছে। তবে আমার তো মনে হয় তার বোর্ডের বিপক্ষেই কোনো ইস্যু আছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি সত্যিই সাকিবের এইচপি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিস্মিত! আমি ভেবেই পাই না, কেন ও কী কারণে সাকিব এইচপি নিয়ে প্রশ্ন তুলল? তার দাবি, এইচপি নাকি প্লেয়ারাই সরবরাহ করতে পারেনি। আমার তার কাছে জানতে চাওয়া, সাকিব নিজেই তো এইচপির ক্রিকেটারদের সাথে খেলল।’
সাকিব এইচপির ক্রিকেটার খুঁজে পান না, এইচপির প্রডাকশন নাকি নেই। হাতে গোনা। ক্ষোভের সঙ্গে এমন কথা জানিয়ে দুর্জয় জাগো নিউজের কাছে সেই ২০১৭-২০১৮, ২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ মৌসুমে কতজন ক্রিকেটার উঠে এসেছে, তার নাম ও সংখ্যা তুলে ধরেন। দুর্জয় জানিয়ে দেন ২০১৭-১৮তে সাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইয়াসির আলি রাব্বি, মেহেদি হাসান মিরাজসহ ১৪ জন, ২০১৮১৯ এ সাঈফ হাসান, আফিফ হোসেন, নাঈম শেখ, সাঈফউদ্দিনসহ ১১ জন, ২০১৯-২০ এ আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, হাসান মাহমুদসহ ৮ জন এবং ২০২০-২১ এ শরিফুল ইসলামসহ ৪ জন জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছে। এ তথ্যগুলো সামনে এনে দুর্জয়ের ভাষ্য, ‘এতগুলো ক্রিকেটার যেখানে এইচপি খেলে এসেছে, সেখানে এইচপির কার্যকরিতা নিয়ে কথা বলেছে। আমার বোধগম্য হচ্ছে না। এইচপির অনেক প্লেয়ার এখনই জাতীয় দলে আছে। এই তো সেদিন এইচপি আয়ারল্যান্ডের যুবাদের সাথে খুব ভাল খেলল।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এইচপির খেলোয়াড়দের ভাল ট্রেনিং চলছে। পুরো দল একটা সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার ভেতরে আছে। মোদ্দা কথা, এইচপি ভাল অবস্থায় আছে। সব কিছু ঠিক চলছে, এমন সময়ে হঠাৎ বলা নেই, কওয়া নেই এমন তীর্যক কথাবার্তা কেন? আমার কাছে খুব অবাক লাগল! আমার মনে হয়, তার বোর্ডের বিপক্ষে কোন ইস্যু আছে।’ দুর্জয় মনে করেন, শ্রীলঙ্কা সফরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় সাকিবের ইমেজের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুনরুদ্ধারেই এমন বক্তব্য দিয়েছেন সাকিব। দুর্জয় বলেছেন, ‘আসলে শ্রীলঙ্কা না যাওয়ার কারণে তার ইমেজ ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তা পুনরুদ্ধারের জন্যই এমন বক্তব্য বলে আমার মনে হয়।’ তাহলে বোর্ড কি এখন সাকিবের বিপক্ষে কোন কঠোর অবস্থান নেবে? তাকে কারণ দর্শানো বা অন্য কিছু শাস্তি দেয়া নিয়ে বিসিবি সভাপতি পাপনের সাথে কথা হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে দুর্জয় জানান, ‘না, না! ওরকম কোন আলোচনা হয়নি। বোর্ড হয়তো পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। বোর্ড সাকিবের কথাবার্তাকে আমলে নিতেও পারে।’