শাল্লার ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে ১৪ দলের আহ্বান

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সুনামগঞ্জের শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। শনিবার (২০ মার্চ) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জোটের ভার্চুয়াল বৈঠকে নেতারা এ আহ্বান জানান। জোটের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন ১৪ দলের শীর্ষ নেতা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শেখ শহিদুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন, ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ডা. শাহাদাৎ হোসেন, জাকির হোসেন, মোসাহেদ আহমেদ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, শাল্লার ঘটনা অনভিপ্রেত। বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, মোদি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আসছেন। এটা ভিন্নখাতে নেয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু সরকার তাকে আমন্ত্রণ করেছে, সরকারের উচিত এর বিরুদ্ধে নানা অপতৎপরতা প্রতিহত করা। ‘১৫ আগস্ট, ২১ আগস্ট যারা ঘটিয়েছে, তারাই আবার সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করার এই পরিবেশ তৈরি করছে’ যোগ করেন আমির হোসেন আমু। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলার সংস্কৃতি ও ধারা থেকে আমরা পিছিয়ে গেছি। বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ অনুযায়ী সে ধারায় চলতে হবে। শেখ হাসিনা ছাড়া কাউকে সে ধারায় দেখি না। তিনি বলেন, শাল্লায় সাম্প্রদায়িকতার ঘটনাকে জলমহালের বিরোধ হিসেবে সামনে আনা হচ্ছে। উল্টো মাছে কোষ ধাওয়াচ্ছে। আমি জানি না, অলিখিত হুকুম দেয়া আছে কি-না যে, হেফাজতের নাম বলা যাবে না? হেফাজত নেতা মামুনুল হক বলে বেড়াচ্ছে মোদি আসলে জুতাপেটা করা হবে। পুলিশ বলেছিল, প্রকাশ্যে সভা করতে পারবেন না। অথচ তারা সারাদেশে নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ-বক্তৃতা করছে। মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু চার মূলনীতির কথা বলেছেন, আমরা তার আদর্শের প্রতি অনুগত থাকলে চারটাই পালন ও বাস্তবায়ন করবো। অসম্ভব বৈষম্য রেখে উন্নয়নের যে ধারা তৈরি করছি, সেটা টেকসই উন্নয়ন কি-না? অথচ টেকসই উন্নয়নে বলা হয়েছে, কাউকে পিছিয়ে রাখা যাবে না।
এ সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুও মেননের সঙ্গে সুল মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর চার মূলনীতি, সাম্প্রদায়িক হামলা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের কথা বলেন। তিনি তার দীর্ঘ আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শের কথা তুলে ধরেন এবং সেটি বাস্তবায়নে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন। জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নতুন মুক্তিযোদ্ধা হতে হবে। বঙ্গবন্ধু যে লড়াই করেছেন একটি স্বাধীন দেশে ও একটি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে। দেশ স্বাধীন হলেও অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম চলমান। এই সংগ্রামে অংশ নিয়ে নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুযোগ আছে। ১৪ দলের নেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা শুধু মুখে বললে হবে না, তার আদর্শের বাস্তবায়ন করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ সময় তিনি বলেন, শাল্লায় হামলার ঘটনায় দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের ষড়যন্ত্র বলে মনে করি।