নৌকার পক্ষে কাজ করায় খুন হন টিটো

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ ‘যশোরের বাঘারপাড়ায় দ্বীন মোহাম্মদ দিলু পাটোয়ারীর হুকুমে খুন করা হয় খালেদুর রহমান টিটোকে। বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার কারণে দিলু পাটোয়ারীর ভাই নূর মোহাম্মদ পাটোয়ারীর নেতৃত্বে টিটোর ওপর হামলা চালানো হয়।’ আলোচিত এই মামলার চার্জশিটে এমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে। বাঘারপাড়া থানার ওসি ফিরোজ উদ্দিন চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দিলু পাটোয়ারীসহ ১৩ জনের নামে যশোর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দিয়েছেন বাঘারপাড়া থানার এসআই আনসার উদ্দিন। আর চার্জশিট থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছেন বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্যা ওরফে আব্দুর রবসহ আরও চারজনকে।
অভিযুক্তরা হলেন, বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী জহুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ পাটোয়ারী দিলু, তার ভাই নূর মোহাম্মদ পাটোয়ারী, হলদা গ্রামের উজির খালাসির ছেলে শরিফুল, বেতালপাড়া গ্রামের ছুরমান মোল্যার ছেলে মনিরুল কানা, এজের আলীর ছেলে সাইদ, মৃত মুনসুর বিশ্বাসের ছেলে আসাদ, শাহ আলমের ছেলে বাবু, সামসুর বিশ্বাসের ছেলে রবিউল, জয়নালের ছেলে শাহিনুর, মোক্তার মোল্যার ছেলে আজিম, হলিহট্ট গ্রামের নাজমুল হুদার ছেলে মাসুদ হোসেন, আবু তাহেরের ছেলে জসিম ও গরীবপুর গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন মুন্সির ছেলে রেজাউল মুন্সি। এই মামলায় অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে, বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং দোহাকুলা গ্রামের মৃত মোদাচ্ছের মোল্যার ছেলে আব্দুর রউফ ওরফে আব্দুর রব, একই উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের মৃত বাকিবিল্লাহ বাকুর ছেলে আতাউল্লাহ সোহান, সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে আমিনুর রহমান মিঠু এবং যশোর শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার মৃত দিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ফেরদাউস হোসেন সম্রাজ।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন ছিল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একই উপজেলার প্রয়াত চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম কাজলের সহধর্মিনী ভিক্টোরিয়ার পারভীন সাথীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন জহুরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ দিলু পাটোয়ারী। নির্বাচনে বেতালপাড়া গ্রামের মুনতাজ মোল্যার ছেলে খালেদুর রহমান টিটো নৌকা প্রতীকের সমর্থনে প্রচারণা চালাতে থাকেন। এতে টিটোর উপর নাখোশ হন প্রতিপক্ষের প্রার্থী দিলু পাটোয়ারীসহ তার লোকজন। ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে খালেদুর রহমান টিটো, তার ভাই বদর উদ্দিন ও চাচা ইন্তাজ উদ্দিন বেতালপাড়া গ্রামের সরদারপাড়ার কালামের চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছা মাত্র দিলু পাটোয়ারী ও আসামি শরিফুলের হুকুমে নূর মোহাম্মদ পাটোয়রীর নেতৃত্বে সকল আসামি ওই তিনজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা টিটোকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যান। এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু টিটোর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক। রাতেই তাকে নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জে টিটো মারা যান। এ ঘটনায় নিহত টিটোর ভাই বদর উদ্দিন বাদী হয়ে ১০ ডিসেম্বর রাতে বাঘারপাড়ায় থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।