বাংলাদেশ এখন আলো আঁধারির মঞ্চ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে একটি আলো-আঁধারির মঞ্চ বলে অভিহিত করেছেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, শুরুর বাংলাদেশ ছিল আলোর দিশারী। আর সাম্প্রতিক বাংলাদেশ একটি আলো-আঁধারির মঞ্চ। যেখানে আলো আছে, তবে অন্ধকার সেটা ম্লান করছে। গতকাল মুজিববর্ষ উপলক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বঙ্গবন্ধু ও চার মূলনীতি’ শিরোনামের আলোচনায় মূল বক্তব্যে সৈয়দ আনোয়ার বলেন, এখানে যখন চার মূলনীতি নিয়ে আলোচনা চলছে সেখানে আওয়ামী লীগের কেউ নেই। থাকার দরকার ছিল। এটা তাদের সম্পত্তি।
তারা ভোগ করছেন। কিন্তু স্মরণ করছেন না। বাণিজ্য করছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ থেকে সরে আসছি কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। সংসদে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র কর্তন করলো। এটা বিকৃতি। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে কাটছাঁট করার অধিকার কারো নেই। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কর্তনের দায় কার? আমি সংসদে প্রশ্ন করেছিলাম। স্পিকারকে এর জবাব দিতে হবে। সংসদের কাছে বঙ্গবন্ধুর মর্যাদা কতটা নেমে গেছে যে তারা জবাব দিলো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনার বা মুছে ফেলার অধিকার কারো নেই। সরকার সেটি করেছে। বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম আছে। এটা নিয়ে তারা কথা বলেন না। এতে তাদের অসুবিধা হয়। সংসদে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ক’দিন লাগাতার আলোচনা হলো। যদিও তা বায়বীয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের টেপ চালানো হলো। সেখানে সমাজতন্ত্র আর ধর্মনিরপেক্ষতা নেই। এক ফজলে হোসেন বাদশা ছাড়া কেউ প্রতিবাদ করেনি। স্পিকার এটির দায় এড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, বেতার থেকে যা পাওয়া গেছে তাই শোনানো হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারের যে প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা তা দেখায়নি। সরকারের কাছে বঙ্গবন্ধুর প্রয়োজনীয়তা নেই। অধ্যাপক আনোয়ার আরো বলেন, বর্তমানে ধর্মনিরপেক্ষতা দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম একসঙ্গে রেখে জগাখিচুড়ি সংবিধান করা হয়েছে। তেলে-জলে মেশানোর ব্যর্থ প্রয়াস। সংবিধানের মূল চার নীতি এখন হারানো দিনের হারানো সুর। তিনি বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম রেখে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। একটা আলো-আঁধারির মধ্যে রয়েছি আমরা। উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়েছি। কিন্তু সেই উন্নয়ন সংবিধানের চার মূলনীতির কতটুকু ধারণ করে সেটা বোঝা দরকার। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশনে ওই আলোচনায় ভার্চ্যুয়ালি সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।