‘ওদের ছেড়ে দাও, আমাকে মেরে ফেলো’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ শহরের ধুলোমাখা রাস্তা। তার উপর সাদা পোশাকে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন এক নান। তার সামনে অস্ত্রসজ্জিত সেনারা দাঁড়িয়ে আছে। সেনাবাহিনীর প্রতি হাত জোড় করে ওই নান তার ‘সন্তানদের’ ছেড়ে দেওয়ার জন্য কাতর আবেদন জানাচ্ছেন। এর বদলে নিজের প্রাণ দিতেও রাজি তিনি। এমনই একটি ঘটনার ছবি সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় মিটকিনা শহরে সোমবার এই ঘটনা ঘটেছে। সাদা পোশাক পরিহিত ওই নারী একজন ক্যাথলিক নান।বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশে এক নানের এই কাতর আবদেন আরও একবার সামনে এনেছে সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারের ভয়ঙ্কর ছবি। সেনাবাহিনীর সামনে এই সাহসিকতার জন্য প্রশংসিতও হয়েছেন তিনি।
তবে তিনি এভাবে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ার পর বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যকেও হাত জোড় করে বসে পড়তে দেখা গেছে। হয়তো তার এমন আচরণে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মনেও নাড়া দিয়েছে, তারাও হয়তো নিজেদের অন্যায় অপরাধ কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন। দেশটিতে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই এর প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। দেশটির বেসামরিক সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয় সামরিক বাহিনী। সাধারণ মানুষ বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজপথে বিক্ষোভ করে চলেছে। সাধারণ মানুষকে বিক্ষোভ থেকে দূরে রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী। প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এই ছবি অন্য মাত্রা যোগ করেছে। ওই নান বলেন, ‘আমি হাঁটু গেড়ে বসে কাতর অনুরোধ করেছি আমার সন্তানদের মেরো না। তাদের অত্যাচার করো না। এর বদলে আমাকে মেরে ফেলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনী যখন কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে উদ্যত হয়েছিল তখন আমার ভয় লাগছিল। ছেলেগুলো ছুটে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করছিল। ওদের বাঁচাতে আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি।’ বিক্ষোভকারীদের তিনি নিজের সন্তান মতোই মনে করেন। আর সে কারণেই সেনাবাহিনীর কাছে তাদের প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছেন।