ইরাকে শান্তির আহ্বান পোপের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান পোপ ফ্রান্সিস ইরাকের মুসলমান ও খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতাদের সব শত্রুতা দূরে রেখে শান্তি ও ঐক্যের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার উভয় ধর্মের পবিত্র পুরুষ হিসেবে বিবেচিত নবী ইবরাহীমের জন্মস্থান উরে আয়োজিত এক আন্তঃধর্মীয় সমাবেশে এই কথা বলেন তিনি। দক্ষিণ ইরাকের প্রাচীন উর নগরীর ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন শেষে পোপ ফ্রান্সিস মুসলমান ও খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতাদের অংশ গ্রহণে আয়োজিত এই সমাবেশে বলেন, ‘স্রষ্টার উপাসনা করা এবং আমাদের প্রতিবেশীদের ভালোবাসাই সত্যিকার ধার্মিকতা।’
পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আমাদের পিতা ইবরাহীমের ভূমির এই স্থান থেকে, যেখানে বিশ্বাসের জন্ম হয়েছে, আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, স্রষ্টা ক্ষমাশীল এবং আমাদের ভাই-বোনদের ঘৃণাই তার নাম অপবিত্রকারী বৃহৎ ধর্মীয় অবমাননা।’ তিনি বলেন, ‘শত্রুতা, উগ্রতা ও সহিংসতা কোনো ধর্মপ্রাণ অন্তর থেকে জন্ম নেয় না, তা ধর্মের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।’ তিনি বলেন, ইরাকে ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তি আসবে না যতক্ষণ ইরাকিরা ভিন্ন ধর্মের বিশ্বাসীদের ‘অপর’ হিসেবে বিবেচনা করবে।
পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘শান্তির জন্য জয়ী বা পরাজিত বিবেচ্য নয় বরং সেই ভাই ও বোনদের প্রয়োজন যারা অতীতের সব ভুল বোঝাবুঝি ও আঘাতকে পেছনে ফেলে সংঘাত থেকে একতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।’ মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদি, তিন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জনক হিসেবে ইবরাহীম বিবেচিত হলেও, পোপের সফর উপলক্ষে উরের আন্তঃধর্মীয় সমাবেশে কোনো ইহুদি প্রতিনিধি ছিলেন না। ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রতিষ্ঠার এক বছর আগে ইরাকে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার ইহুদি জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল। ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর বেশিরভাগই ইরাক ছেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দেশটিতে ইহুদি বাসিন্দার সংখ্যা বিরল। স্থানীয় এক গির্জার কর্তৃপক্ষ জানায়, ইহুদিদের সাথে তারা যোগাযোগ করলেও ইরাকে তাদের অবকাঠামোগত কোন স্থান না থাকায় পরিস্থিতি তাদের জন্য জটিল হয়ে পড়ে। এর আগে শুক্রবার তিনদিনের সফরে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে পৌঁছেন পোপ ফ্রান্সিস। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এটিই পোপ ফ্রান্সিসের প্রথম বিদেশ সফর। অপরদিকে, ইরাকে পোপ ফ্রান্সিসের এই সফরের মাধ্যমে প্রথম কোনো ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু দেশটিতে সফরে এলেন। উর পরিদর্শনে যাওয়ার আগে শনিবার ইরাকের শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ আলী আল-সিস্তানির সাথে নাজাফে তার বাড়িতে সাক্ষাত করেন পোপ ফ্রান্সিস। ৫০ মিনিটের একান্ত বৈঠকের পর উভয় নেতা ইরাকের মুসলমান ও খ্রিস্টান উভয়কে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দেন। রোববার ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় মসুল ও এরবিল শহর পরিদর্শনে যাবেন পোপ ফ্রান্সিস।
সূত্র : আলজাজিরা