মোদির সফরে প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত রোহিঙ্গা ইস্যু

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত রোহিঙ্গা ইস্যু। আলোচনা দরকার, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মোদি সরকার স্পষ্ট অবস্থান নেবে কিনা? যেটা রোহিঙ্গাদের পক্ষে যাবে। তিনি বলেন, ভারত এতদিন সমর্থন দিয়ে আসছিল অং সান সুচিকে। সেই সুচি বা গণতন্ত্র কোনোটাই এখন আর মিয়ানমারে নেই। এখন আর ভারত বলতে পারবে না যে, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য আমরা তাদের সমর্থন দিচ্ছি। মিয়ানমারে এখন সামরিক বাহিনী ক্ষমতায়। এখন তো আরো স্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়া দরকার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া দরকার তা নিয়ে মানবজমিন-এর সঙ্গে ড. ইমতিয়াজ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মহলে যখন ভোটাভুটি হয় তখন আমরা দেখি ভারত কখনই রোহিঙ্গাদের পক্ষে ভোট দেয়নি। ভারত রোহিঙ্গা শব্দও কিন্তু ব্যবহার করে না। এটা খেয়াল রাখা দরকার। ড. ইমতিয়াজ বলেন, মোদির সফরে আলোচনায় রোহিঙ্গা এজেন্ডা যদি না রাখা হয়- সেটা হবে দুঃখজনক। আমাদের এখন ভারতের সবচেয়ে বড় যে সাপোর্ট দরকার সেটা রোহিঙ্গা বিষয়ে। নরেন্দ্র মোদি এসে যদি বলে, আমি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আছি। সেটা হবে রোহিঙ্গাদের জন্য বিশাল পাওয়া। এতে মোদিও জনগণের এবং গণমাধ্যমের একটা সাপোর্ট পাবেন। এটা হলে পুরো বিশ্ব তাকে অভিনন্দন জানাবে। তিস্তা ও সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিস্তার সমাধান যে হবেই না, সেটা বোঝা যাচ্ছে। তিস্ত্তার বিষয়ে আমরা আমাদের সমাধান পেয়ে গেছি। নিজেরা যে চিন্তা-ভাবনা করছি চীনের অর্থায়নে বাঁধ বেঁধে আমরা পানি রেখে দেবো, যেই পানিটা খরা মৌসুমে ব্যবহার করবো। সেটা ভারত পছন্দ না-ও করতে পারে। সেটা আমাদের কোনো বিষয় না। কারণ ভারত আমাদের এই জায়গায় যেতে পুশ করেছে। ভারত যদি সমাধান করতে পারতো আগে তাহলে তো সমাধান হয়েই যেত। ভারত তো এখন আর বলতে পারবে না যে, তোমরা সমাধান করো না। কারণ বছরের পর বছর এ সমস্যার সমাধান হয়নি। এখন বলতে গেলে তিস্তায় পানিই নেই। ভারতের তিস্তায় পানি দিতে হলে তারা যে, ১৮-২০টি বাঁধ নির্মাণ করেছে সিকিমে সেগুলো ভাঙতে হবে। ভারত কখনই সেগুলো ভাঙবে না। আমার মনে হয় না তিস্তা নিয়ে কোনো অগ্রগতি হবে। আরেকটা, যে বিষয়ে একই কথা বারবার বলা হচ্ছে সীমান্ত হত্যায় জিরো টলারেন্স। কোনো হত্যা হবে না। প্যানডামিকের সময় কয়েক মাস বর্ডারে জিরো টলারেন্স ছিল। সেটা তো প্যানডামিকের কারণে। এই জায়গায় তারা যদি সিরিয়াস না হয় তাহলে দেখা যাবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়ে সম্পর্ক থাকবে কিন্তু জনগণের কোনো উৎসাহ থাকবে না। জনগণ এটাকে অন্যভাবে দেখবে। সে জন্য জনগণের সাপোর্ট যদি পেতে হয় তাহলে তিস্তা, সীমান্ত হত্যা এগুলোর সমাধান করতে হবে। আর এগুলোর যদি সমাধান করতে না পারে তাহলে দেখা যাবে বড় পর্যায়ে সরকার ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সম্পর্ক তৈরি হবে। জনগণ তাতে উৎসাহী থাকবে না।