ইবিতে থামছে না চুরি, প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ

0

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা॥ কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবারও চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের ২১৭ নম্বর রুমে ও গোসলখানায় শাওয়ারের রড চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন আগে শেখ রাসেল হলের সাবমার্সিবল পাম্প, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের চার কক্ষের আসবাবপত্র, রবীন্দ্র-নজরুল দ্বিতীয় কলা ভবনে দুই ভ্যান টাইলস ও আট কার্টন ক্যাবল চুরির ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের দায়িত্বের অবহেলায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ নূর নামের এক শিক্ষার্থী জানান, মঙ্গলবার (২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি তার নিজ কক্ষ ২১৭ নম্বর রুমে প্রবেশ করেন। এসময় তার কক্ষের তালা ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। এসময় তারসহ কক্ষের আরও তিনজনের বই, জামা-কাপড়, জুতা, ভেতরের আলমারি ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র চুরি হয়েছে বলে জানান তিনি। তার পাশের কক্ষের তালা ভাঙারও চেষ্টা করা হয়েছে। সাদ্দাম হলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হলের উত্তর ব্লকের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার ওয়াশরুমের শাওয়ারের রডসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে সাদ্দাম হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও বিভাগীয় সভাপতি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলগুলোতে প্রবেশ করতে স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি, মালামালের বিবরণের ফরম পূরণ করতে হয়। যদি এতোকিছু মেইনটেইন করেই হলে প্রবেশ করতে হয়, তাহলে চোর কিভাবে বারবার ক্যাম্পাসে চুরি করে?’
হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি দেখতে হাউজ টিউটরদের পাঠিয়েছি। আজ এ বিষয়ে আমরা হলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ে বসব।’ এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের নির্মাণসামগ্রী চুরি করতে এসে হাতেনাতে ধরা পড়ে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে তার গ্যাংদের তথ্য দেয়। এসময় সে কাদের পরামর্শে চুরি করে এবং কিভাবে করে তার স্বীকারোক্তি দেয়। স্বীকারোক্তিতে সে শেখ রাসেল হলের দেড় লাখ টাকার সাবমার্সিবল পাম্প চুরি, রবীন্দ্র নজরুল একাডেমিক ভবন থেকে দুই ভ্যান টাইলস চুরি করে থানা গেট দিয়ে নেয়া, আট কার্টন ক্যাবল চুরিসহ নির্মাণাধীন ভবনের ছোটখাটো লোহা ও অন্যান্য জিনিস চুরি করে বলে জানায়। চুরির এ মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেট, লালন শাহ হল ও বঙ্গবন্ধু হলের পকেট গেট দিয়ে বের করা হতো। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বারগুলোতে কোনো নিরাপত্তাকর্মী নেই। স্বীকারোক্তির পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়েই ওই কিশোরকে ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া ওই গ্যাংদের কারও বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সাদ্দাম হলের বিষয়ে আমার কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তবে আগের ঘটনাগুলোতে চোরেরা কেন ছাড় পেয়ে যাচ্ছে এবং কিভাবে তাদের ব্যবস্থা নেয়া যায়, সে বিষয়ে গতকালও আমি শৈলকুপা থানার ওসির সঙ্গে কথা বলেছি।’