টাইলস-স্যানিটারি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার চায় বিসিএমইএ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং-জনিত শুল্ক ফাঁকি প্রতিরোধে ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য হালনাগাদের পাশাপাশি দেশীয় টাইলস ও স্যানিটারি পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারসহ আগামী পাঁচ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দাবি করেছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিএমইএর পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।
প্রস্তাবে তিনি বলেন, দেশীয় সিরামিক শিল্প খাতের সুরক্ষায় কাঁচামাল আমদানিতে আর্দ্রতা সমন্বয় কাঁচামাল ও উপকরণের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক কমানো ও বিদেশ থেকে তৈরি সিরামিক পণ্য আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের কারণে শুল্ক ফাঁকি রোধে ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য হালনাগাদ করা জরুরি। বর্তমানে দেশীয় টাইলস ও স্যানিটারি পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে যথাক্রমে ১৫ ও ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। তিনি এ শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং মূসক ও আয়কর আইনের কতিপয় বিধান সংশোধনের প্রস্তাব দেন।
সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, কাঁচামাল ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ দেশগুলোর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও রফতানি বাজারে অসম বাণিজ্য প্রতিযোগিতা থেকে দেশীয় সিরামিক শিল্পকে রক্ষা ও এর প্রসারে সহায়তা করতে এবং দেশে সিরামিক শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে অংশীদার হতে প্রস্তাব বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে দেশী-বিদেশী প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে ৬৮টি সিরামিক শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশীয় উৎপাদকরা পণ্য রফতানির মাধ্যমে দেশের জন্য যেমন মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে সক্ষম, তেমনি ক্রমান্বয়ে তৈরি পণ্যের আমদানি হ্রাস পাওয়ায় কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধ হচ্ছে। এ অবস্থায় কাঁচামাল ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ দেশগুলোর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও রফতনি বাজারে অসম বাণিজ্য প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষার মাধ্যমে দেশীয় সিরামিক শিল্পের প্রসারে সহায়তায় প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
আলোচনায় বিসিএমইএর সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, সম্ভাবনাময় উদীয়মান এ শিল্পের উৎপাদনকারী কারখানাগুলোকে কর অবকাশ সুবিধার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। আগামী পাঁচ বছর কর অবকাশ সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করে তিনি বলেন, এতে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব হবে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ কর্মসংস্থানও বাড়বে। তিনি আরো বলেন, সিরামিক টাইলস এখন বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচিত নয়। ভবন নির্মাণের অন্যতম উপকরণ হিসেবে ব্যবহূত এ পণ্যের ব্যবহার স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হওয়ায় পরিবেশবান্ধব পণ্য হিসেবে সাধারণের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে দেশীয় টাইলসের মূল্য কমবে এবং ব্যবহারের মাত্রা বাড়বে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, আমাদের দেশে ১৯৯২ সালে সিরামিক শিল্পের যাত্রা হয়। এনবিআরের সহায়তার কারণে এ শিল্প আজকের এ অবস্থানে এসেছে। দেশীয় চাহিদা পূরণ করে তারা এখন রফতানিমুখী শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে। কোনো শিল্প যদি এগিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে এনবিআর দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় সহায়তার হাত বাড়াবে সব সময়।
সভায় এনবিআরের আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট শাখার সদস্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সিরামিক শিল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।