দুর্ভোগ ভোগান্তির এক গ্রামের নাম হুগলাবুনিয়া

0

জি.এম. মিজানুর রহমান, পাইকগাছা (খুলনা) ॥ পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের একটি গ্রামে যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। পানীয়জলের জন্য যেতে হয় ৬ কিলোমিটার দূরে অন্য গ্রামে। গ্রামের পাঁচ শতাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করছেন। উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নে অবস্থিত অবহেলিত গ্রামটির নাম হুগলাবুনিয়া। যাতয়াতের জন্য কোনো রাস্তা নেই। গ্রামের চারপাশে শুধু পানি। কিন্তু তা মাছ ও ফসলের কাজের জন্য। পানের কোনো উপযোগী পানির ব্যবস্থা নেই।

স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ ৫০ বছরে স্থানীয় অনেক মেম্বার ও চেয়ারম্যান শুধু আশ্বাস দিয়েও নেননি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। গ্রামটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষ বসবাস করেন। শুধুমাত্র ভোটের সময় গ্রামবাসীর খোঁজ-খবর নেয়া হয়। মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয় রাস্তা ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা তপন কুমার মন্ডল এবং ওশিবানী রানী মন্ডল। বর্ষা মৌসুমে গ্রামটিকে দ্বীপবেষ্ঠিত মনে হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, গজালিয়া চৌরাস্তা থেকে পশ্চিমে কয়েক কিলোমিটার লম্বা এ গ্রাম। যাতায়াতের জন্য একটি মাত্র মাটির রাস্তা থাকলেও সেটি অত্যন্ত সরু ও নিচু। রাস্তার পশ্চিম পাশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন যাতায়াত করেন। গ্রামে একটা প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। যেখানে বর্ষাকালে বলতে গেলে শিক্ষার্থীরা যাতায়ত বন্ধ করে দেয়। এ সময় অঘোষিত ছুটি ভোগ করে এমনটি জানালেন স্থানীয়রা। মাধ্যামিক বা কলেজ শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। সুপেয় পানির জন্য গ্রামের মহিলাদের যেতে হয় প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরের স্থানে । এখানে চলেনা কোনপ্রকার যানবাহন। পায়ে হেটেই চলতে হয় তাদের। স্কুলশিক্ষক তপন কুমার মন্ডল বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে আমাকে অতিরিক্ত পোশাক নিয়ে স্কুলে যেতে হয়।’ দশম শ্রেণির ছাত্রী ছবি রানী মন্ডল জানায়, তাদের দু’টি ড্রেস নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম হিরা বলেন, রাস্তার দু পাশে মৎস্য ঘের ও সরকারি খাল থাকায় রাস্তার কাজ করা সম্বব হয় না। বাঁশের সাঁকো মেরামত করা হলেও বর্ষা মৌসুমে পানির চাপের কারণে ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়। পাইকগাছা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, রাস্তার জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। খালের ওপর ব্রিজের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। পরিমাপ সম্পন্ন হয়েছে। খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, গ্রামবাসীর দুর্ভোগলাঘবে দ্রুত রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণের যাবতীয় প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে।