চৌগাছার অধিকাংশ পাকা সড়ক ইটভাটার মাটিতে নষ্ট , বর্ষায় হতে পারে মরণফাঁদ

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় ইটভাটার মাটিতে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার পাকা সড়ক পথচারীদের চলাচলের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিছু কিছু এলাকার সড়কের এতটাই বেহালদশা যে দেখে বুঝার উপায় নেই এই সড়কটি পাকা না কাঁচা। বৃষ্টি মৌসুম শুরুর আগেই সড়কে পড়ে থাকা মাটি সরিয়ে না ফেলা হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
চৌগাছায় যেখানে সেখানে গজিয়ে উঠেছে ইটভাটা। পৌর শহরের আশপাশ থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের দিকে তাকালেও এখন দেখা যায় ইটভাটা। প্রতি বছর মৌসুম শুরুর আগে থেকেই ভাটা মালিকরা মাটি সংগ্রহ শুরু করেন আর ভাটা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। উপজেলার ১৭টি ইটভাটা মাটি সংগ্রহে এক ধরণের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। ফসলি জমি থেকে শুরু করে পুকুর, খাল, ডোবা নালা, পতিত এমন কোন জায়গা নেই যে ভাটা মালিকরা সেখান থেকে মাটি সংগ্রহ করেন না। এ সব মাটি ট্রাকে ভর্তি করে বেপরোয়া গতিতে চলতে থাকে পাকা সড়কে। একটি পাকা সড়কে দিনে কয়েক শ বার করে মাটি বোঝাই ট্রাক চলতে থাকে। ট্রাকে ভর্তি করা মাটি পাকা সড়কের উপর পড়তে পড়তে এমন এক পর্যায়ে উঠেছে যে সড়ক গুলোর দিকে তাকালে হঠাৎ বুঝে উঠা কষ্ট এটি পাকা না কাঁচ। সড়কের উপর পড়ে থাকা মাটির উপর দিয়ে নানা যানবাহন চলার কারণে মাটি পিচের সাথে মিশে গেছে। কিছু কিছু এলাকার সড়কে এখনও মাটির ঢিবি লক্ষ্য করা যায়। এই পরিস্থিতিতে সড়কের উপর থেকে মাটি অপসারণ করা না হলে বর্ষা মৌসুমে সাধারণ পথচারীদের চরম খেসারত দিতে হবে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের এক সকালে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে ঝিরঝির এক পশলা বৃষ্টি হয়ে যায়। বৃষ্টি চৌগাছার পুড়াপাড়া এলাকাতে তুলনামূলক কিছুটা বেশি হয় বলে জানা গেছে। অল্প বৃষ্টিতেই কাদার কারণে ওই এলাকার প্রতিটি সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠে, ঘটে ছোট খাটো দুর্ঘটনা। চৌগাছা পৌরসভায় কর্মরত একজন কর্মচারী জানান, সকালে অফিসে আসার সময় কমলাপুর মোড় থেকে শুরু করে চৌগাছার টেংগুরপুর মোড় পর্যন্ত সড়কটি ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। পাকা সড়কে কাদামাটি মিশে এতটাই পিচ্ছিল হয়ে যায় যে মটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে রাখা বড়ই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। বলাচলে বাইক বন্ধ করে ঠেলতে ঠেলতে অফিসে আসতে হয়। পথচারী সুজন হোসেন বলেন, তিনি পুড়াপাড়া হতে চৌগাছা বাজারে মোটরসাইকেলে আসতে শুরু করেন। পথিমধ্যে কমলাপুর এলেই হালকা বৃষ্টিতে পাকা সড়ক চরম পিচ্ছিল হয়ে যায়। আমি মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের উপরই পড়ে যাই তবে বড় কে নো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ওই সকালে ভ্যান চালক, বাইসাইকেল চালক থেকে শুরু করে ছোট খাটো সব ধরণের বাহনের সড়কে চলাচল চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তবে বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে সড়ক গুলোতে চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান স্থানীয়রা। স্থানীয বেশ কয়েকজন অফিস যাত্রী জানান, রাস্তায় এভাবে মাটি পড়ে থাকলে বর্ষার সময় পুরো রাস্তাটা কাদা হয়ে যাবে। সে সময় মোটর সাইকেল, সাইকেল এসব দুই চাকার গাড়ি তিগ্রস্থ হবে বেশি। রাস্তাগুলো হয়ে উঠতে পারে বিপজ্জনক।
চৌগাছা-যশোর, চৌগাছা-ঝিকরগাছা, চৌগাছা-মহেশপুর, চৌগাছা-কোটচাঁদপুর ও চৌগাছা-পুড়াপাড়ার প্রধান সড়কসহ গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ পাকা সড়কের দিকে তাকালে সকলের চোখে পড়বে মাটি পড়ে থাকার দৃশ্য। এ সব মাটি পাকা সড়ক থেকে সরিয়ে ফেলা না হলে বর্ষায় পথচারীদের চরম খেসারত দিতে হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।