সাগর-রুনীর খুনিরা কাদের লোক জানতে চান সাংবাদিক নেতারা

0

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকারীরা সরকারি দলের মধ্যেই অবস্থান করছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেন, কোন মাফিয়া ওই খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে ও খুনিরা কাদের লোক সাংবাদিক সমাজ তা জানতে চায়। অবিলম্বে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবি জানান নেতারা। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের যৌথ উদ্যোগে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সাংবাদিকদের এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি করেন সাংবাদিক নেতারা।
বিক্ষোভ সমাবেশ সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ বলেন, সাগর-রুনির হত্যার ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। অথচ আজও খুনিদের গ্রেফতার করা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য র‌্যাব এ পর্যন্ত ৭৮ বার সময় নিয়েছে। তিনি প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, তদন্তের জন্য র‌্যাবকে আর সময় দেয়া উচিত নয়। শওকত মাহমুদ বলেন, এই তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার জন্য হত্যাকাণ্ডের সাথে সরকারের কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়ে দেশবাসীর সন্দেহ রয়েছে। এক দিন অবশ্যই তাদের বিচার করা হবে বলে মন্তব্য করেন শওকত মাহমুদ। শহীদ জিয়ার বীর উত্তম খেতাব কেড়ে নেয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সাগর-রুনি দম্পতির হত্যার ৭৮ হাজার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও খুনিদের ধরা হয়নি। ৭৮ বার সময় নেয়া হয়েছে। অথচ ৪৮ ঘন্টার জন্যে খুনিদের ধরার কথা বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সাগর-রুনীর খুনীরা কোন মাফিয়ার আশ্রয়ে আছে বা আসলে তারা কার লোক তা সাংবাদিক সমাজ জানতে চায়।
এম আবদুল্লাহ বলেন, গত ১২ বছরে ৪৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের শীর্ষ নেতা রুহুল আমিন গাজী ও সাংবাদিক সাদাত হোসেনকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বিএফইউজে সভাপতি এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছে। একই সাথে দ্রুত কারারুদ্ধ সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি করেন তিনি। সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ বলেছেন, সাগর-রুনির হত্যার পর আমরা অনেকবার খুনিদের গ্রেফতারের দাবি করেছি। তখন তারা দেশেই ছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বাধীনভাবে কাজ করেনি বা করতে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, দেশ এখন একটি মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিএফইউজের মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন বলেন, সাগর-রুনির হত্যার বিচার এক দিন হবে, সেদিন বেশি দূরে নয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেছেন, সাগর-রনির হত্যার বিচার পাইনি, এখন আর বিচার চাই না। আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় চাই। এ সময় কারারুদ্ধ সাংবাদিক নেতাদের মুক্তি দাবি করেন ইলিয়াস খান। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, দেশের জনগণ জানে কারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। সরকারের লোকেরা জড়িত বলেই এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে না। বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও এইচ এম আল আমীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজে’র মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন ও ওবায়দুর রহমান শাহীন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানী, সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাসার, ডিইউজের সহ-সভাপতি বাছির জামাল, বিএফইউজের প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, নির্বাহী সদস্য এ কে এম মহসীন ও জাকির হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক কায়কোবাদ মিলন, ডিইউজে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু, নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই ও আবদুল হালিম। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন অর্পণা রায়, মাজহারুল ইসলাম ও শাখাওয়াত হোসেন মুকুল। প্রেস বিজ্ঞপ্তি