ব্রোকলি চাষে লাভবান হচ্ছেন যশোরের চাষিরা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফুলকপির মত সবুজ পাতা সমৃদ্ধ ব্রোকলি সাধারণত বিদেশি উন্নত জাতের একটি সবজি। চীনা, থাইলান্ড, আমেরিকাসহ পৃথিবীর কয়েকটি উন্নত রাষ্ট্রে রেস্টুরেন্টে খাদ্যের চাহিদা সৃষ্টি করতে স্যুপসহ অন্যান্য সুস্বাদু খাবারে ব্রোকলি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা থেকে থেকে সরাসরি প্রোটিন ও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। লাভজনক বাজারদর ও ক্রেতা চাহিদার কারণে যশোরে অঞ্চলে শীতকালীন সবজি ব্রোকলি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। উন্নত মানের এ সবজি চাষ করে নিজেদের ভাগ্যে বদলে ফেলেছেন অনেক কৃষক।
২০১৩ সালে সর্বপ্রথম যশোরের মনিরামপুর উপজেলা পলাশী গ্রাশের কয়েকজন চাষি এ সবজি চাষ শুরু করে। ওই সময়ে উন্নতমানের এ সবজি চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক পরিচালিত ‘সফল’ প্রকল্প নামক একটি সংস্থা। উন্নতমানের এ ব্রোকলি ফুলকপির থেকে তিন থেকে চারগুণ বেশী দামে বিক্রি হওয়ায় মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই বানিজ্যেক চাষে ঝুঁকে পড়েন এলাকার অনেক কৃষক।
মনিরামপুর উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের পলাশী গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, উন্নতমানের এ সবজি প্রথম চাষ শুরু করেন তারা। গত কয়েক বছর ধরে বেশ লাভের মুখ দেখে আসছেন। তাদের দেখাদেখি জেলার অন্যান্য উপজেলার অনেক চাষিই এখন এ সবজি চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।
এলাকার চাষি প্রদীপ বিশ্বাস জানান, ব্রোকলি চাষে কৃষি বিভাগের নানা সহায়তা পাচ্ছেন। প্রথমে তাদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে অক্টোবর মাসে বীজ তলায় ছিটিয়ে চারা তৈরি করেন। এরপর চারা রোপণ করেন মূল আবাদি জমিতে। পরবর্তী বছরে স্থানীয় কৃষি দপ্তরের সহায়তায় আরো উন্নতমানের বীজ সংগ্রহ করে চাষ করেন ব্রোকলির। তিনি জানান, সবজি চাষের মত স্বাভাবিক কৃষি জমিতে ও বৈরি আবহাওয়াতে ব্রোকলি সহজেই চাষ করা যায়। বাজারে অন্যান্য সবজির চেয়ে দামও বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) দীপঙ্কর দাস বলেন, বাণিজ্যিকভাবে ব্রোকলি চাষের উজ্জল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে যশোরে। তিনি বলেন, যশোর হচ্ছে সবজি জোন হিসেবে পরিচিত। দেশের মোট সবজির চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই পূরণ করা হয় যশোর থেকে। এ জেলার চাষিরা গতানুতিকভাবে একমুখি সবজি চাষ করে আসছেন। এজন্য সবজি চাষে বিশেষ আকর্ষণ ও লাভজনক করে তুলতে উন্নতমানের এ ব্রোকলি চাষ করতে কৃষককে উৎসাহিত করা হচ্ছে। জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ব্রোকলি চাষ হয়েছে বলে তিনি জানান। চাষিরা জানান, ব্রোকলির বাজার দর বেশ ভালো। ফুলকপির মতো একই ফসল হওয়ার পরও ফুলকপির চেয়ে প্রায় তিনগুন দামে তা বাজারে বিক্রি করা যাচ্ছে। পাশাপাশি এ সবজি অনেকটা রোগ সহিষ্ণু হওয়ায় ফুলকপির চেয়ে তুলনামূলকভাবে উৎপাদন খরচ কম। প্রতি হেক্টর জমি থেকে ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ব্রোকলি গাছ উৎপাদিত হয় বলে কৃষকরা জানান।