খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখা হয়েছে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র নেতারা। সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দির তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। পূর্বঘোষিত এই প্রতিবাদ কর্মসূচি উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকেই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হন। এসময় তারা বেগম জিয়া ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এদিকে, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সকাল থেকেই প্রেস ক্লাব ও এর আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার পরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পরে হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেন তিনি। সমাবেশে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজকের এই দিনে অন্যায়ভাবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছিল। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, আমরা এতই দুর্ভাগা, এতই ব্যর্থ যে, তাদের মুক্ত করার কোনো ব্যবস্থা করতে পারিনি। তাই বলে সারা জীবন খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকবেন- এটা সত্যি নয়। আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করেছে আমাদের বন্ধন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিএনপি’র চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইনশাআল্লাহ দেশে ফিরে আসবেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়াকে দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করার মামলা দেয়া হয়েছে। আত্মসাৎ করার ঘটনা প্রমাণ করতে পারেনি। দুই কোটি টাকার জন্য খালেদা জিয়ার যদি সাজা হয়। তাহলে দুই কোটি টাকা এখন তো আট কোটি টাকা হয়ে গেছে, তার জন্য খালেদা জিয়ার পুরস্কার কি হবে? জানতে চাই।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বাংলাদেশের জনগণ দেশের দুর্নীতির কাহিনী জানে। এ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশকে যদি বাঁচাতে চান, যদি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে অলিখিত যুদ্ধে শামিল হতে হবে। এ যুদ্ধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে। এ যুদ্ধে নিজেদের অবস্থান তুলে না ধরা, দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে বন্দি থেকে মুক্ত করতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি হলে দেশে গণতন্ত্রের নেতৃত্বের মুক্তি হবে। তিনি বলেন, শাস্তির নামে অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে অপমান করা হয়েছে। তিনি কোনো অন্যায় করেননি। গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্র তৈরি করতে গেলে তিনি বাইরে থাকতে পারেন না। বাংলাদেশে দুর্নীতির অভয়ারণ্য তৈরি করতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে থাকতে হয়। নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, করোনাকে উপেক্ষা করে আপনারা যারা রাস্তায় বেরিয়েছেন এ জীবনটাকে অর্থবহ করার জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করার জন্য, আমরা সেই যুদ্ধে শামিল হই।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশ চালাচ্ছে মাফিয়ারা। এর প্রমাণ পৌরসভা নির্বাচনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী যিনি আওয়ামী লীগ করতেন, তাকে এসপি সাহেব ডেকে নিয়ে বলেছে, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তার সঙ্গে কথা হবে। তার নাম সবুজ। এসপি সাহেবের ডাকে তিনি গেছেন। তাকে গাড়িতে করে সরাসরি ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশ মানুষের নিরাপত্তা দেবে। কিন্তু সেই পুলিশ একজনকে ডেকে নিয়ে এসে গুম করে ঢাকায় নিয়ে এসেছে।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যাংকের অর্থ চুরির অভিযোগ করে রিজভী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক চুরি করেছে আওয়ামী লীগের নেতারা। বেসিক ব্যাংক চুরি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ বিভিন্ন জায়গায় পাবলিক প্রতিষ্ঠান চুরি করেছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি’র তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, বিএনপি’র সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।