চীনে রফতানি বন্ধ ও বাজারে দাম কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়েছে বহু কাঁকড়া খামার

0

এইচ.এম.শফিউল ইসলাম,কপিলমুনি (খুলনা) ॥ সাতীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের কয়েক শ কাঁকড়া খামার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। করোনা ভাইরাসের মহামারিতে কাঁকড়া রফতানি বন্ধ থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন এসব অঞ্চলের খামারিরা। ক্রমাগত লোকসানের কবলে পড়ে ইতোমধ্যে ছোট-বড় অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় চীনে কাঁকড়া রফতানি। পাশাপাশি দেশের বাজারে দামও কমে যায়। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে চলতি বছর আরও অনেক খামারেই কাঁকড়া চাষ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সাতীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় সরকারি হিসেবে দুই সহস্রাধিক কাঁকড়া খামার রয়েছে। এসব খামারের সঙ্গে যুক্ত চাষির সংখ্যা পা^চ সহস্রাধিক। রফতানি বন্ধ থাকায় খামারে চাষ করা অধিকাংশ কাঁকড়াই মরে যাচ্ছে। সেজন্য খামারিদের চরম লোকসানে পড়তে হচ্ছে। সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরেই নানা প্রকার রোগবালাইয়ের কারণে চিংড়ি চাষে তেমন লাভ না হওয়ায় অনেক খামারিই কাঁকড়া চাষে ঝুঁকে পড়েন। কিন্তু ২০২০ সালের প্রথম দিকে করোনার থাবায় কাঁকড়া রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। রফতানি বন্ধ ও দাম কমে যাওয়ায় সব খামারের কাঁকড়া সময়মতো বিক্রি করতে পারেনি চাষিরা। এক পর্যায়ে পুকুরেই কাঁকড়া মরে যায়। তবে করোনার প্রকোপ সামান্য কমতে থাকলে গত অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে আবারো অনেক খামারি চাষ শুরু করেন। কিন্তু উৎপাদিত কাঁকড়া সরাসরি চীনে না যাওয়ায় অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হয়েছে। ফলে কাঁকড়া বিক্রি করে খামারিদের উৎপাদন খরচও উঠছে না। বর্তমানে কাঁকড়া চাষ বন্ধ করেও খামারিরা স্বাভাবিক ঋণের দায়ে ঘরে থাকতে পারছেন না। আর যারা লোকসান টেনেও কাঁকড়া চাষ চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের অবস্থাও বেসামাল। এ অবস্থায় চীনে সরাসরি কাঁকড়া রফতানি চালু করতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বিনা সুদে ঋণ দিয়ে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন চাষিরা। পাইকগাছা উপজেলার কাঁকড়া ব্যবসায়ী শেখ আনারুল ইসলাম,শুশান্ত,কামরুল ইসলাম,দেবু ঘরামী বলেন, রফতানিযোগ্য কাঁকড়া সাধারণত পাঁচটি গ্রেডে বিক্রি হয়। বর্তমানে প্রত্যেক গ্রেডের দাম ৩ শ থেকে ৪ শ টাকা কেজিতে কমেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে ২০০ গ্রাম (ফিমেল) ওজনের কাঁকড়ার কেজি ছিল ১৫ শ থেকে ১৭ শ টাকা, ওই কাঁকড়ার বর্তমান দাম ৮শ টাকা। ১৮০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়া ছিল ১ হাজার টাকা, তা বর্তমানে ৬শ টাকা। ১৫০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়া ছিল ৮শ টাকা, এখন তা ৪শ টাকা। ১০০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়া ছিল ৬শ টাকা কিন্তু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩শ টাকায়। এমন দামে কাঁকড়া বিক্রি করে চাষিদের যেমন খরচ ওঠে না, তেমনি ব্যবসায়ীদেরও লোকসানে পড়তে হয়। এ প্রসঙ্গে পাইকগাছা উপজেলা কাঁকড়া সরবরাহ সমিতির সদস্য শেখ ইমাদুল ও দেবব্রত জানান, সারা দেশে দুই লাধিক মানুষ কাঁকড়া চাষ ও কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত।