পর্যাপ্ত আমদানিতে চালের দাম কমল কেজিতে ৫ টাকা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পর্যাপ্ত চাল আমদানি হওয়ায় পণ্যটির দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে হিলিতে চালের দাম কমেছে কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল আমদানি আরো বাড়লে হিলিতে পণ্যটির দাম বর্তমানের তুলনায় আরো কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর শুল্কস্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধান ও চালের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ও চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছিল সরকার। এতে পড়তা না হওয়ায় একপর্যায়ে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এবার আমনের ভরা মৌসুমে কয়েক মাস ধরেই চালের দাম বেড়ে লাগামহীন হয়ে পড়ে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই মোতাবেক হিলিসহ দেশের বিভিন্ন আমদানিকারককে সাত লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে দুই দফায় কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। ফলে দীর্ঘ দেড় বছর পর গত ৯ জানুয়ারি ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়।
হিলি বাজারের চাল বিক্রেতা অনুপ কুমার বসাক ও তপন কুমার বলেন, দেড় বছর বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানির ফলে চালের দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। আগে যে স্বণা ৫ জাতের চাল বিক্রি হয়েছিল ৪৮ টাকা, এখন তা থেকে কমে ৪২-৪৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে, ২৮ জাতের চাল ছিল ৪৮-৫০ টাকা, তা থেকে কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৬ টাকায়, মিনিকেট চাল যেখানে ৬০ টাকা বিক্রি হয়েছিল এখন তা ৫৪-৫৫ টাকায় নেমেছে। ভারত থেকে চাল আমদানির জন্যই দেশের বাজারে চালের দাম অনেকটা কমেছে।
বর্তমানে বন্দর দিয়ে যে হারে চাল আমদানি হচ্ছে এটি যদি বাড়ে তাহলে চালের দাম আরো কমে আসবে। তবে ভারত থেকে চাহিদার তুলনায় কম চাল আসছে। এর প্রধান কারণ হলো ভারতের অভ্যন্তরে তীব্র যানজট। একটি চালের ট্রাক লোডিং থেকে শুরু করে বন্দরে আসতে ২০-২৫ দিন সময় লাগছে। তাছাড়া চাল রফতানির ক্ষেত্রে ভারতীয় রফতানিকারকদের খাদ্য অধিদপ্তর থেকে এনওসি নিতে হচ্ছে, যার কারণেও দেরি হচ্ছে। এছাড়া আমরা ৫০০ টনের এলসি দিতে চাইলেও তারা কম পরিমাণে এলসি নিতে চাইছেন। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ধান সংকটের কারণে মিলাররা পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল তৈরি করতে পারছেন না। অন্য প্রদেশ থেকে ধান নিয়ে এসে চাল করতে হচ্ছে। চালের এলসি খোলার ক্ষেত্রে সরকারি কিছু বিধিনিষেধের প্রভাব আমাদের ওপর রয়েছে যা কষ্টসাধ্য। এ রকম কিছু জটিলতার কারণে চাহিদামতো চাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এছাড়া চালের আমদানি শুল্ক এমনভাবে আরোপ করা হয়েছে যাতে দেশীয় চালের দাম ও ভারতীয় চালের দাম একই পর্যায়ে এসে পৌঁছচ্ছে। তবে যানজটসহ চাল আমদানির ক্ষেত্রে এসব জটিলতা কেটে চালের আমদানি বাড়লে চালের দাম আরো কমবে বলে।
হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধের পর সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে গত ৯ জানুয়ারি হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। বন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৩৫ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে। গত জানুয়ারিতে বন্দর দিয়ে ২৬৬টি ট্রাকে ১০ হাজার ৭০০ টন চাল আমদানি হয়েছে। বন্দর দিয়ে চাল আমদানির ফলে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বেড়েছে তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন আয়ও বেড়েছে।