অর্থবছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব ঘাটতি ১৫৮ কোটি টাকা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৯৩ কোটি ৯৯ টাকা লাখ টাকা, যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেয়া ছয় মাসের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৫৮ কোটি ২ লাখ টাকা কম। তবে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথমার্ধের তুলনায় এ সময়ে ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশিক মহামারী করোনার প্রভাবে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি বেড়েই চলেছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে না পারায় রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না।
ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ভোমরা বন্দরে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৫২ কোটি ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৭৩ কোটি ৫২ লাখ, আগস্টে ৭৭ কোটি ৫৯ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬৭ কোটি ৬৮ লাখ, অক্টোবরে ৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা, নভেম্বরে ১১৪ কোটি ৮ লাখ ও ডিসেম্বরে ১৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা।
এ লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে গেল ছয় মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৯৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৫৪ কোটি ৭৩ লাখ, আগস্টে ৪৬ কোটি ৪১ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৫৩ কোটি ৯৩ লাখ, অক্টোবরে ৭২ কোটি ১৯ লাখ, নভেম্বরে ৭৩ কোটি ৪৬ লাখ ও ডিসেম্বরে ৯৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। এর আগে গেল অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ভোমরা বন্দরে রাজস্ব অর্জিত হয়েছিল ৩৮৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৫৮ কোটি ২ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে।
ভোমরা স্থলবন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি পড়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যবসায়ীরা চাহিদা মাফিক পণ্য আমদানি করতে পারেন না। অজ্ঞাত কারণে ভোমরা বন্দরে পণ্য আমদানিতে নানা ধরনের বাধানিষেধ রয়েছে। একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দর হওয়া সত্ত্বেও সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে দেয়া হয় না ব্যবসায়ীদের। ফলে এখানকার ব্যবসায়ীরা অন্যান্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন। তাছাড়া করোনা মহামারীর কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ফলে রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে।
করোনা মহামারী রাজস্ব আদায় ঘাটতির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমির মামুন। তবে তিনি আশাবাদী, অর্থবছরের বাকি ছয় মাসে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বাড়তে পারে। ফলে পুরো অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হতে পারে বলে মনে করছেন এ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ভোমরা বন্দরে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। প্রথমার্ধ বাদে জানুয়ারিতে ১৩২ কোটি ৫৫ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৫ কোটি ২৭ লাখ, মার্চে ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ এবং জুনে ১৬ কোটি ৩ লাখ টাকা আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গেল অর্থবছরের এপ্রিল ও মে মাসে বন্দর বন্ধ থাকায় কোনো রাজস্ব আদায় হয়নি। যে কারণে চলতি অর্থবছরের এ দুই মাসে কোনো রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়নি। এর পরও যে ১০ মাসের রাজস্ব আদায় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা গেল অর্থবছরের তুলনায় ১৬৩ কোটি টাকা কম।