দামুড়হুদা থানার এসআই আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে শ্বশুর-জামাইকে আটক করে অর্থ আদায়

0

রিফাত রহমান, চুয়াডাঙ্গা ॥ চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে শ্বশুর-জামাইকে আটক করে নির্যাতনসহ জেল জরিমানার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার ১৯ জানুয়ারি রাতে। অভিযোগে জানা যায়, মেহেরপুর জেলার গহরপুর গ্রামের স্বপন আলির স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে গত মঙ্গলবার ১৯ জানুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আমজাদ হোসেনসহ একদল পুলিশ উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মরহুম আত্তাব আলির ছেলে দিনমজুর হাসাদ আলি ও তার মেয়ের স্বামী (জামাই) লীপুর গ্রামের জমির মোল্লার ছেলে জাহিদুল ইসলামকে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। তাদেরকে পিকআপযোগে লীপুর গ্রামের টুকুকাটার মাঠে নিয়ে শারিরীক নির্যাতন চালায় এসআই আমজাদ হোসেন। নির্যাতন শেষে রাত ১২টার দিকে থানায় নেয়া হয়। ওই রাতেই হাসাদের ছেলে জিহাদ (১৫) ও স্বপন আলির স্কুল পড়–য়া মেয়েকে থানায় হাজির করা হয়। এরপর এসআই আমজাদ হোসেন তাদের ভয়ভীতি ও জেলা-জরিমানার কথা বলে টাকা দাবি করেন। জেল জরিমানার ভয়ে ভুক্তভোগীরা এক পর্যায়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পরদিন বুধবার তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ সময় স্কুল পড়–য়া মেয়েটিকে তার অভিভাবকের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। ভুক্তভোগী হাসাদ আলি অভিযোগ করে বলেন, এসআই আমজাদ হোসেন আমাদেরকে বলেন, তোদের ৫বছরের জেল হবে। আর জেলে যেতে না চাইলে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। আমি বলি, স্যার আমি তো দিন মজুর খেটে খাই, এতো টাকা কোথায় পাবো। তার চেয়ে ভালো আমার বাড়ি ৮ হাজার টাকা আছে মিষ্টি খাওয়ার জন্য আপনারা নিতে পারেন। এরপর শুরু হয় এসআই আমজাদ হোসেন এর দরকষাকষি। তারপর সে টাকার পরিমাণ কমিয়ে ১ লাখ টাকায় নেমে আসে। আমি বলি স্যার এতো টাকা দেয়া সম্ভব না। কোথায় পাবো এতো টাকা? পরদিন বুধবার আমার স্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় ধারকর্জ করে ২০ হাজার ও ঘরে থাকা ৮ হাজার মোট ২৮ হাজার টাকা নিয়ে থানায় আসে। ওইদিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এসআই আমজাদ হোসেন ২৮ হাজার টাকা গুনে নিয়ে আমাদের ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আমজাদ হোসেন বলেন, এ যেদিন রাতে ছেলে-মেয়ে উদ্ধারের সময় আমরা গ্রামে যাই সাথে ওসি আব্দুল খালেক স্যার নিজে ছিলেন। আমরা ছেলে ও মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। ছেলে-মেয়ে পরস্পর আত্মীয় হওয়ায় মেয়ের বাবা থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেয়। তারপর থানা থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। টাকা নেয়ার ব্যাপারটি তিনি অস্বীকার করেন। তাদের আটক করে ওই রাতে শারীরিক নির্যাতনের কথাও তিনি অস্বীকার করেন। ভুক্তোভোগী হাসাদ আলি তার জবানবন্দী দিয়েছে যা ভিডিও রের্কড রয়েছে, এমন জবাবে তিনি বলেন, ওটা দিয়ে আমার কি হবে ? এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, এ ঘটনাটি আমাদের পুলিশ অফিসে কর্মরত একজনের। স্কুল পড়–য়া মেয়েটি তারই আত্মীয়। সে কারণে মেয়েটিকে উদ্ধারের সময় আমি নিজেই ছিলাম। এ সময় আমার অলক্ষ্যে যদি টাকা নেয়ার ঘটনাটি ঘটে তবে আমি তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। এসআই আমজাদের টাকা নেয়ার বিষয়টি আরো কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করেছে, সে কারনে এটা আমি নিজেই দেখবো।