যশোর পৌরসভা নির্বাচন: দলের শীর্ষ নেতাদের পে নেওয়ার চেষ্টায় ঢাকায় ব্যস্ত যশোর আ.লীগের ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশী

0

আকরামুজ্জামান ॥ যশোর পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। মনোনয়ন লড়াইয়ে বিজয়ী হতে তারা দলের শীর্ষ নেতাদের সমর্থনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলটির জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারাও তাদের পছন্দের মনোনয়ন প্রত্যাশীর জন্য ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় যশোর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হতে চান প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৬ জন পরিচিত মুখ। ইতোমধ্যে তারা প্রচারণাও শুরু করেছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের পক্ষে যেসব নেতারা দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী তার মধ্যে বর্তমান মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু নির্বাচনে আবারও মেয়র প্রার্থী হতে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশায় আছেন। তবে জহিরুল ইসলাম রেন্টুর বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের দৌড়ে ইতোমধ্যে প্রচারণায় সরব হয়ে উঠেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী, জেলা যুব মহিলালীগের সভাপতি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবীর কবু, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আসাদুজামান মিঠু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হায়দার গনি খান পলাশ ও জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি কাজী আব্দুস সবুর হেলাল। উল্লিখিত ৬ নেতাই এখন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতাদের সমর্থনের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। অনেকে জমাও দিয়েছেন। ঢাকায় অবস্থানরত কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৩ জানুয়ারি থেকে দলীয় সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে মনোনয়নের আবেদন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। যা আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। ইতোমধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকেই দলীয় মনোনয়নের আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন এবং আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাসা অফিসে নিয়মিত যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্টজনদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, শেখ হেলালসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাসা ও অফিসে যশোর থেকে আগত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভিড় জমাচ্ছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা অনেকেই গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় অবস্থান করে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। বর্তমান মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু গত কয়েকদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডী কার্যালয় থেকে রবিবার তিনি দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করবেন কাল জমা দেবেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানান। এ বিষয়ে মেয়র জহিরুল ইসলাম রেন্টু বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি দল আমাকে আবারও নৌকা প্রতীক দেবে। কারণ আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে যশোর পৌরসভার উন্নয়নের স্বাক্ষর রেখে চলছি। গত ৫ বছরে আমি যে উন্নয়ন করেছি তা আগে কেউ করতে পারেননি। তাই বিশ্বাস করি উন্নয়নের ধারবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে এ নির্বাচনেও দল আমাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে বেছে নেবে। তিনি বলেন, দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছি। সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে আবদন ফরম জমা দেবো বলে আশা করছি। দলীয় মনোনয়ন নিয়েই ইনশা আল্লাহ যশোরে ফিরে আসবো বলে তিনি জানান। দলের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, শনিবার ধানমন্ডি দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার পর রবিবার জমা দিয়েছি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন দলের সাথে যুক্ত আছি, অনেক ত্যাগ রয়েছে দলের প্রতি, আমার বিশ্বাস সেই মূল্যায়ন এ নির্বাচনে পাবো। দলীয় মনোনয়ন পেলে যশোর পৌরসভাকে নান্দনিক পৌরসভা হিসেবে রূপ দেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করবেন বলে তিনি দাবি করেন। আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী হায়দার গনি খান পলাশ বলেন, শনিবার দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি এবং জমাও দিয়েছি। দলের সিনিয়র নেতাদের সাথেও যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি। আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ হিসেবে বিশ্বাস আছে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে সম্মানিত করা হবে। দলীয় মনোনয়ন পেলে নৌকা প্রতীকের বিজয়ের মাধ্যমে আমি মেয়র হয়ে জনগণের খেদমত করতে পারবো বলে আশা করছি।
জেলা যুবমহিলা লীগের সভাপতি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী বলেন, ঢাকায় এসে মনোনয়নের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবো এবং জমাও দেবো বলে সিদ্ধান্ত আছে। আমার বিশ্বাস একজন নারী মেয়র প্রার্থী হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। কেননা বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। তাই দলের একজন পরিক্ষীত কর্মী হিসেবে এবার নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাবো বলে আশা করছি। আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ূন কবীর কবুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। গত কয়েকদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সাথে যোগাযোগও করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন পাবো। এদিকে ঢাকায় অবস্থানরত একাধিক নেতা জানান, গত শনিবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আসাদুজ্জামান মিঠু ও জেলা শ্রমিক লীগ নেতা আব্দুস সবুর হেলাল দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এরমধ্যে কাজী আব্দুস সবুর হেলাল গতকাল রবিবার আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডীর কার্যালয়ে তার মনোনয়নের আবেদন ফরম জমা দেন।