প্রচলিত নাকি ভার্চুয়াল কোর্ট চলবে, কী মত আইনজীবীদের?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিল পুরো বিশ্ব। অর্থনীতিসহ সব খাতের ওপর পড়ে এর বিরূপ প্রভাব। করোনার শুরুর দিকেই বন্ধ হয়ে যায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। পরে আইনজীবীদের দাবির মুখে প্রথম দিকে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে ভার্চুয়ালি বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগে বিচার কাজ চালু হয়। এখন আপিল বিভাগের পৃথক দুটি বেঞ্চ এবং হাইকোর্ট বিভাগে ভার্চুয়াল ও অ্যাকচুয়াল (প্রচলিত)—উভয় পদ্ধতিতেই চলছে বিচারিক কাজ। নতুন বছর ২০২১-এ ভার্চুয়াল নাকি (শারীরিক উপস্থিতিতে) অ্যাকচুয়াল—কোনটিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা, এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জানা গেল নানা সমস্যার কথা। আইনজীবীদের অভিযোগ, উচ্চ আদালতে নামমাত্র ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে মামলা চলে। ক্লার্ক বা অন্য কাউকে পাসওয়ার্ড নিতে সশরীরে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে যেতে হয়, কোর্ট থেকে শুধু জুম লিংক দেয়া হয়। অ্যাফিডেভিট করার জন্য মক্কেলকে সশরীরে কোর্টে আসতে হয়। ওকালতনামা ভার্চুয়ালি করা সম্ভব হয় না। বিচারপতিদের সঙ্গে আইনজীবীদের ইন্টারেকশনেও সমস্যা তৈরি হয়।
আইনজীবীরা বলছেন, সবকিছুই করতে হয় শারীরিক উপস্থিতিতে, কেবল শুনানি হয় ভার্চুয়ালি। তাই পরিপূর্ণ অনলাইন অর্থাৎ ভার্চুয়াল ব্যবস্থা না হলে শারীরিক উপস্থিতিতেই মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হোক। তবে কেউ কেউ বলছেন, এখন সব বেঞ্চই ভার্চুয়ালি পরিচালিত হোক। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ভার্চুয়াল নাকি শারীরিক উপস্থিতি কোন পদ্ধতিতে চলবে, এ বিষয়ে নতুন বছরে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি-না জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মো. সাইফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আপনারা জানেন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ নতুন করে গঠন করা হয়েছে। এখনো যে অবস্থায় আছে সেভাবেই চলবে। ভার্চুয়াল এবং অ্যাকচুয়াল দুটোতেই চলছে।’ মহামারির সময়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক কার্যক্রম ভার্চুয়ালি নাকি অ্যাকচুয়ালি, কোন পদ্ধতিতে হওয়া উচিত সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক ট্রেজারার অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি বলেন, ‘ভার্চুয়ালি আমাদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে, প্র্যাকটিকালি অ্যাকচুয়াল কোর্ট হলে যেটা আমরা সবসময় করে অভ্যস্ত- মামলা মেনশন, বিওদের (বেঞ্চ অফিসার) সঙ্গে কথা বলা, কোর্টে জজ সাহেবদের সামনা-সামনি অ্যাপিয়ারেন্স থাকে। আর ভার্চুয়ালি বারবার লাইন কেটে যায়। কথা বলার সময় অডিও চলে যায়, ভিডিও লাইন কেটে যায়। সাংঘাতিক রকমের ডিস্টার্ব হয়, এভাবে মামলায় সমস্যা হয়। কারণ মামলায় কথা বলতে একটা ফ্লো লাগে, ওইটাতে আমরা খুব অসুবিধার মুখোমুখি হই।’ এই আইনজীবী বলেন, ‘তবে এটাও সত্যি যে এখন পর্যন্ত করোনায় আমাদের সুপ্রিম কোর্টেই বোধ হয় ৭০ জনের মতো আইনজীবী মারা গেছেন। আর সারাদেশে শত শত আইনজীবী মারা গেছেন। সেই হিসেবে যদি সুপ্রিম কোর্টে সবই ভার্চুয়াল হয়, তাহলে এটাকে আরও কিভাবে মডার্ন করা যায় সেটি চিন্তা করতে হবে।’ ফাহিমা নাসরিন মুন্নি বলেন, ‘আমাদের সুপ্রিম কোর্টে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক যাতায়াত করে থাকে। এখন করোনার সময় হয়তো একটু কমতে পারে, তারপরও কিন্তু সংখ্যাটা অনেক বড়। এখন যদি কোর্টটা ভার্চুয়ালি হয়, অ্যাফিডেভিট করার জন্য মক্কেল, ক্লার্ক এবং আইনজীবীকে কোর্টে সশরীরে যেতে হয়, তাহলে এই ভার্চুয়াল করে লাভটা কী? আমি উকিল চেহারা দেখাবো কম্পিউটারে, ল্যাপটপে কিংবা ফোনে, এটাতো ভার্চুয়াল না। ভার্চুয়াল হলে পুরোপুরি ভার্চুয়াল হতে হবে। কিন্তু অ্যাকচুয়ালি আর ভার্চুয়ালি যে মিকচার কোর্ট করেছেন, এখন এটা আমাদের সাংঘাতিকভাবে হ্যাসেল দিচ্ছে।’
ফাহিমা নাসরিন মুন্নি আরও বলেন, ‘করোনাকালে যে সুরক্ষা নেয়ার কথা সেগুলো আমরা নেবো। অ্যাকচুয়াল কোর্ট আগের মতো না হলেও পেশা বাঁচিয়ে রাখা এবং বিচারপ্রার্থীদের কথা চিন্তা করে বেশি সংখ্যক কোর্ট দেয়া উচিত। আমরা যখন দিনে কমপক্ষে পাঁচটা মামলা করতে পারতাম এখন সপ্তাহে একটা মামলাও করতে পারি না। হাইকোর্টে এরপরেও যদি অ্যাকচুয়াল এবং ভার্চুয়াল পাশাপাশি থাকে তাহলে ভার্চুয়াল কোর্টের টপ টু বটম ভার্চুয়ালি হতে হবে। তা না হলে ভার্চুয়াল পন্থা আমাদের কোনো সুফল দিতে পারছে না।’ এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান বলেন, ‘ভার্চুয়ালি পদ্ধতিতে কোর্ট চলায় বিশেষ করে উচ্চ আদালতে খুব বেশি অসুবিধা হওয়ার কথা না। কারণ উচ্চ আদালত তো ফ্যাকচুয়াল ম্যাটারগুলো দেখে না, লিগ্যাল ম্যাটারই দেখে। মানে, উচ্চ আদালতে যখন মামলাগুলো আসে ট্রায়াল শেষ করেই। সাক্ষ্য, প্রমাণ ইত্যাদি সিভিল ও ক্রিমিনাল সব মামলাতে ট্রায়াল কোর্টেই হয়। তারপরে উচ্চ আদালতে শুনানিতে তেমন কোনো অস্বস্তি মনে হচ্ছে না, বরং আমার মতে সুবিধাই মনে হয়। তবে উচ্চ আদালতে ভার্চুয়াল এবং অ্যাকচুয়াল দুটো পদ্ধতি থাকতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে ইন্টারনেট কোনো সমস্যা মনে হয়নি। তবে, এটা ঠিক যে কোর্ট পরিচালনার জন্য ইন্টারনেটের ফাস্ট গতি লাগবে এবং এটা অবশ্যই দরকার। কারণ ইন্টারনেটের গতি যদি না থাকে তাহলে সমস্যা হয়। ইন্টারনেটে সমস্যা একদিন আমারও হয়েছিল। তারপরও চেষ্টা থাকতে হবে, চেষ্টা থাকলে সবই সম্ভব।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘ভার্চুয়াল থেকে পুরোপুরি অ্যাকচুয়াল হওয়ার মতো সিচ্যুয়েশন এখনো আসেনি দেশে। তবে ভার্চুয়ালি কোর্ট আরও বাড়িয়ে দেয়া যায় কি-না, আর আস্তে আস্তে অ্যাকচুয়ালে চলে আসা যায় কি-না ভেবে দেখা যায়। এখন শীতের সময়, কোনো কিছু খুব বেশি পরিবর্তন করা ঠিক হবে না। এছাড়া করোনার সেকেন্ড ওয়েভের একটি বিষয় আছে। আমার মনে হয় ভার্চুয়ালি আরও কোর্ট বাড়ানো যায়।’ ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘ভার্চুয়াল কোর্ট এটা নতুন সংযোজন। বিচারপতিদের সেফটি মোডে থাকার সুযোগ হয়েছে। আমার মনে হয় সেকেন্ড ওয়েভটা কাভার করা পর্যন্ত আরও কোর্ট বাড়িয়ে দিলে আমাদের জন্যই ভালো হতো। তবে আল্টিমেটলি অ্যাকচুয়ালে চলে আসতেই হবে। নইলে কতো দিন এভাবে থাকা।’ ভার্চুয়াল এবং অ্যাকচুয়াল শুনানির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অপর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘ভার্চুয়াল পদ্ধতি কোনো স্থায়ী পদ্ধতি নয়। আমি মনে করি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বাংলাদেশের আদালত পরিচালনা করার সুযোগ নেই। তবে বিশেষ প্রয়োজনে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালত পরিচালনার সুযোগ থাকা উচিত। যেন কোনো ব্যক্তিবর্গ বা সিনিয়র আইনজীবীরা কখনো যদি ভার্চুয়ালি শুনানি বা আলোচনা করতে চান তাহলে করতে পারেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি (ভার্চুয়াল) সাধারণ নিয়ম হওয়া উচিত নয়।’ তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন পরিবেশে এটি ঠিক আছে। তবে ভার্চুয়ালি শুধু মামলার শুনানি হলেই চলবে না, আদেশগুলোও ভার্চুয়ালি দিতে হবে। অনলাইন সিস্টেমে যেটাকে ই-জুডিশিয়ারি বলে, সেটাতে প্রজেক্টে বলা আছে যে, মামলা দায়ের থেকে শুরু করে একেবারে নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই যেন অনলাইন পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা যায়, এটার নামই হলো ই-জুডিশিয়ারি।’ এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অপর আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, ‘ভার্চুয়াল পদ্ধতিটা সময়ের প্রয়োজনে উদ্ভাবিত একটি পদ্ধতি। প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে গিয়েও ভার্চুয়ালে একটা রিট বেঞ্চ থাকতে পারে। যারা কোর্টে আসতে পারে না- সিনিয়র আইনজীবী বয়সের কারণে, অসুস্থতার কারণে বা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটা কিন্তু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটা মাধ্যম হতে পারে যে, উভয়পক্ষের আইনজীবী কোর্টে উপস্থিত না হয়েও একটা কনভেনিয়েন্ট জায়গা থেকে শুনানি করার সুযোগ পেতে পারেন।’ ভার্চুয়াল পদ্ধতির সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে যে প্রবলেম হলো, ইন্টারনেটের গতিটা খুবই স্লো। একটু পরপর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ধরুণ আমি কী বলছি বিচারপতি কোনো কিছুই বুঝতে পারছেন না, বা বিচারপতি কী বলছেন আমরা কিছুই শুনছি না, অর্ডার একটা হয়ে গেছে। এই যে ইন্টারেকশন, এটা স্মুথলি না থাকলে কিন্তু ভার্চুয়ালি সমস্যা হচ্ছে। আরও একটা বিষয় হচ্ছে- কোর্ট ম্যানেজমেন্টের কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। দেখা গেলো- একটি বেঞ্চে মেনশন করা ডিফিকাল্ট হয়ে গেছে, আমরা আইনজীবীরা যে যার মতো করে তাড়াহুড়ো, কিছুটা চিল্লাপাল্লা শুরু করে দেই। কে কার আগে বলবে, কোর্ট ম্যানেজমেন্ট অর্থাৎ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কোর্ট পরিচালনার জন্য একটা সুন্দর গাইডলাইন তৈরি করা যেতে পারে। যদিও একটি প্র্যাকটিস ডাইরেকশন আছে, এটা কিন্তু খুবই শর্ট।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভার্চুয়াল পদ্ধতি চলমান থাকতে পারে কোভিড-১৯ না থাকলেও। একটা অল্টারনেটিভ পদ্ধতি থাকা উচিত। যেহেতু এটা শুরু হয়েছে। ভার্চুয়াল কোর্টে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টকে এগিয়ে আসতে হবে, সঙ্গে সঙ্গে আইনজীবীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার।’
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুসরাত জাহান বলেন, আমার কাছে মনে হচ্ছে এখন যেভাবে সীমিত আকারে ফিজিক্যাল ও ভার্চুয়াল কোর্ট চলছে; করোনাকালে এভাবে কোর্টগুলো চললেই ভালো হয়। কারণ আপনারা দেখছেন বিভিন্ন জায়গায় করোনা কিন্তু অনেক বেড়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে এই শীতকালটা। নিউজে দেখেছি ভ্যাকসিন নেয়ার পরও উন্নত বিশ্বের কোন একটা দেশে ২৪০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন আইনজীবীদের কোর্ট, ক্লায়েন্ট, ক্লার্কসহ বিভিন্ন জনের সংস্পর্শে আসতে হয়। আইনজীবীরা অন্যান্য অফিসের কর্মকর্তাদের মতো একটি নির্দিষ্ট রুমের মধ্যে বসে অফিস করেন না। করোনাকালের এই সময়টা একটা বিশেষ পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে আগে হচ্ছে আমাদের বেঁচে থাকা, সেই সঙ্গে কাজও করতে হবে। তিনি বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টে অনেক সময় ইন্টারনেট ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। এসময় বিচারপতিরা মামলায় ব্যতিক্রম কিছু করেন না। পরে যখন আইনজীবীরা আবার কানেক্ট হয়ে কোর্টকে সমস্যার কথা বলেন, তখন সেটা আদালত অ্যাকসেপ্ট করে নেন। আপাতত ভার্চুয়াল কোর্টে বড় ধরনের তেমন কোনো সমস্যা অনুভব করছি না। ভার্চুয়াল এবং অ্যাকচুয়াল পদ্ধতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমার মনে হয় ভার্চুয়াল পদ্ধতিটাই খুব ভালো। এই পদ্ধতি নিয়ে আস্তে আস্তে চর্চা হতে একটু সময় লাগবে। ভার্চুয়াল কোর্ট অনেক ভালো, কারণ কোর্টে আসতে ক্লায়েন্টদের এবং আইনজীবীদের যে সময় নষ্ট হয়, এই সময়ে আইনজীবীরা পড়াশোনা করতে পারেন, মনোযোগী হতে পারেন। সিরিয়ালের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোর্টে গিয়ে বসে থাকতে হয় না। বিচারিক সময় পাওয়া যায়।’
কিশোরগঞ্জ থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে উচ্চ আদালতে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী এএম জামিউল হক ফয়সাল বলেন, ‘একটা পরিস্থিতির কারণে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল যে ভার্চুয়াল ছাড়া চলবে না। কিন্তু দেখা গেল, একইসঙ্গে ভার্চুয়াল এবং অ্যাকচুয়াল দুই পদ্ধতি চলাতে আইনজীবীরা অনেক সমস্যায় পড়েন। তাই আদালতের কার্যক্রম যে কোনো একটা মাধ্যমে চলে যাওয়া উচিত।’ ভার্চুয়াল পদ্ধতি নিয়ে আইনজীবীদের নানা অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘সমস্যার কথা আমাদের কেউ কিছু বলেনি। তবে প্রথম দিকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কোর্ট চালু হওয়ার পরে যেসব সমস্যার কথা অবগত করা হয়েছিল সেগুলোর বিষয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন তো জানামতে কোনো সমস্যাই হচ্ছে না। আদালতের শুনানিতে যদি নতুন কোনো সমস্যা হয়ে থাকে সেটা আমাদের না জানালে কী ব্যবস্থা নেবো?’
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে নিয়মিত আদালত বন্ধ রাখা হয়। এ অবস্থায় বিচারপ্রার্থীদের কথা বিবেচনা করে ভার্চুয়াল আদালত পদ্ধতি চালু করা হয়। এরপরে ওই বছরের ৯ মে এ বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করে বিল আকারে জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। অধ্যাদেশ জারির পর ১১ মে থেকে সারাদেশে ভার্চুয়াল আদালত কার্যক্রম শুরু হয়, যা অব্যাহত রয়েছে। তবে, আইনজীবীদের পক্ষ থেকে ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি তোলায় এবং নিয়মিত আদালত খুলে দেয়ার দাবির প্রেক্ষাপটে তাদের ভার্চুয়াল আদালত পদ্ধতি নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে আইন মন্ত্রণালয়।