বেনাপোল কাস্টমস হাউস: টার্গেটের এক হাজার ১০৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতি

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব ঘাটতি চলছেই। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ১০৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ছয় মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৯৯৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। তার বিপরীতে আদায় হয়েছে এক হাজার ৮৮৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। তবে গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ৩৪২ কোটি টাকা রাজস্ব বেশি আদায় হয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের পরিসংখ্যান শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শামীম হোসেন জানান, বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে স্থলপথের পাশাপাশি রেলপথেও আমদানি বেড়েছে। এতে করে গত বছরের তুলনায় এ বছর রাজস্ব ঘাটতি কম হতে পারে। বেনাপোল স্থলবন্দর এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের এই সময়ে বাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। তার বিপরীতে আদায় হয়েছিল এক হাজার ৫৪৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমসে লক্ষ্যমাত্রার নির্ধারণ করা হয়েছিল পাঁচ হাজার ৫৬৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছিল তিন হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার ২০০ কোটি টাকা। জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বেনাপোল বন্দরে ব্যাপক হারে মিথ্যা ঘোষণায় শুল্কফাঁকি দিয়ে পণ্য আমদানি বেড়ে গেছে। ফলে কোনোভাবেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কৌশলে দিচ্ছেন এ শুল্ক ফাঁকি।
গত নভেম্বরে শুল্কফাঁকির অভিযোগে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আটটি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বাতিল ও চারটি সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। তবে হাতে গোণা কয়েকজন ধরা পড়লেও অধিকাংশ দুর্নীতিবাজরা থাকছে ধরা-ছোওয়ার বাইরে। ফলে কোনোভাবে রোধ হচ্ছে না শুল্কফাঁকি দিয়ে পণ্য আমদানি। আর সে কারণে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব ঘাটতি চলছেই। বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম জানান, পণ্য চালান খালাসে আগের চেয়ে এখন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে। শুল্ক ফাঁকি বন্ধে কড়াকড়ি আরোপ করায় কিছু ব্যবসায়ী এ বন্দর দিয়ে আমদানি কমিয়েছেন। বিশেষ করে রাজস্ব বেশি আসে—এমন পণ্য কম আমদানি হচ্ছে। এতে রাজস্ব কিছুটা ঘাটতি হয়েছে। তবে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন তা পূরণের। তিনি আরও জানান, শুল্ক ফাঁকির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনার প্রাদুর্ভাবে গত বছরের মার্চ থেকে কয়েক মাস আমদানি কম হওয়ায় রাজস্ব আদায় হ্রাস পায়। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায় ও বাড়ছে। অর্থ বছরের শেষে ঘাটতি পুষিয়ে যাবে বলে তারা আশাবাদী।