ইসি সবার জন্য সমতল ক্ষেত্র প্রস্তুত করে নাই : বদিউল আলম

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ভোট কারচুপি, সংঘর্ষ, হামলা, ভোট বর্জন, নানা অভিযোগসহ বিএনপি সমর্থিত জয়ী এক কাউন্সিলরের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের ৬০টি পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সবার জন্য সমতল ক্ষেত্র প্রস্তুত না করায় খুন, সংঘর্ষ, কারচুপি ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচন নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী জয়ী হওয়ার পর তাকে হত্যার ঘটনা দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি) অপরাগতা প্রকাশ করেছে। তারা কঠোর ব্যবস্থা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। তারা অনেক ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে। তারা সমতল ক্ষেত্র প্রস্তুত করে নাই। এসব কারণেই এগুলো ঘটছে।’ সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. তরিকুল ইসলাম খান জয়লাভের পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের ছুরিকাঘাতে খুন হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরপর থেকে সেখানে সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। এ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনও করেছেন। গাইবান্ধা সদর উপজেলার পৌর নির্বাচনে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কোমরনই কেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি আটকে দিয়েছে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরই মধ্যে সেখানে একটি সরকারি গাড়িতে আগুন ও তিনটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে সংঘর্ষ চলছিল। এছাড়াও আরও অসংখ্য নির্বাচনী বিধিবহির্ভূত ঘটনা ঘটার অভিযোগ উঠেছে দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে। যদিও ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো ছিল। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। আপনাদের যে প্রচার মাধ্যম, সেখানে দেখিয়েছেন প্রচুর ভোটার উপস্থিতি। তারা ভোট দিয়েছেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার সহযোগিতায় একটি সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে।’ অবশ্য নির্বাচনের চেয়ে জীবন অনেক বেশি মূল্যবান বলে বিকেলেই মন্তব্য করেছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনে ক্রমাগত সহিংসতা বেড়েই চলছে। সহিংসতা ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে পারে না। নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিবর্তন না হলে এই সহিংসতা বন্ধ করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সবার ঐকমত্য আবশ্যক। যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে মানুষের জীবন অনেক বেশি মূল্যবান।’ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার আরও বলেছিলেন, ‘আমি সাভার পৌরসভার তিনটি ভোটকেন্দ্রের ১৮টি বুথ পরিদর্শন করি। দুপুর ১টা পর্যন্ত ওই সব ভোটকেন্দ্রে ৭ হাজার ৩১১ জন ভোটারের মধ্যে এক হাজার ২৩২ জন ভোট দিয়েছেন। তিনটি বুথে তিনজন বিরোধী দলীয় প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট দেখতে পাই কিন্তু অন্য কোথাও এজেন্ট ছিল না। এছাড়া সাভার পৌর এলাকায় বিরোধী দলীয় প্রার্থীর কোনো পোস্টার দেখতে পাইনি। এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলা যায় না। যেকোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে তা সিদ্ধ হয় না। একতরফা নির্বাচন কখনো কাম্য নয়।’