লোকসমাজ ডেস্ক॥ দেশের বাজারে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সম্প্রতি ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এর মধ্য দিয়েই গতকাল দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন পর বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হওয়ায় বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে।
গতকাল বিকাল ৪টায় ভারত থেকে তিনটি ট্রাকে ১১২ টন চাল দেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে বন্দর দিয়ে দীর্ঘ দুই বছরের বন্ধ্যত্ব ঘুচেছে। হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, এর আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়েছিল। এরপর চাল আমদানিতে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কারণে পড়তা না থাকায় চাল আমদানি বন্ধ ছিল। দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার সে সময় চালের আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে চালের ঊর্ধ্বমুখী মূল্য রুখতে আমদানি শুল্ক কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে সরকার। পরে তা আরেকবার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। ৩ ও ৫ জানুয়ারি দুই দফায় হিলিসহ দেশের ২৯ চাল আমদানিকারককে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়।
হিলি স্থলবন্দরে কর্মরত শ্রমিক সাইদুল ইসলাম ও সেলিম হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে আগে প্রচুর চাল আমদানি হতো, এ কারণে সে সময় আমাদের কাজও ভালো হতো। মাঝে বহুদিন ধরে চাল আমদানি বন্ধ থাকায় আমাদের আয়ও কমে যায়, ফলে সমস্যা হচ্ছিল। আজ (শনিবার) থেকে বন্দর দিয়ে আবারো চাল আমদানি শুরু হয়েছে, এতে আমাদের কাজ যেমন বাড়বে, তেমনি আমাদের আয়ও বাড়বে, যা দিয়ে দুবেলা দুমুঠো ভাত খেয়েপরে বাঁচতে পারব।
চাল আমদানির কার্যসম্পাদনকারী হিলি স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আলহাজ জয়নাল আবেদিনের স্বত্বাধিকারী শেরেগুল ইসলাম বলেন, আমার আমদানিকারক নওগাঁর মেসার্স জগদীশ চন্দ্র রায় খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১১২ নং স্মারকমূল্যে ভারত থেকে ১০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। তার মধ্যে আজই (গতকাল) তিনি প্রথম তিনটি ট্রাকে ১১২ টন চাল আমদানি করেছেন। ভারতীয় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মারুতি ইন্টারন্যাশনাল এ চালগুলো রফতানি করছে। প্রতি টন চাল ৩৫৬ ডলার মূল্যে আমদানি করা হয়েছে। বর্তমানে কাস্টমসে চাল ছাড়করণের প্রক্রিয়া চলছে। এটি সম্পন্ন হলে এসব চাল দেশের বাজারে সরবরাহ করা হবে।
হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল, আজ ভারত থেকে তিন ট্রাক চাল প্রবেশের মধ্য দিয়ে আমদানি শুরু হলো। এ চাল আমদানির কারণে এরই মধ্যে বন্দর এলাকায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে। বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের দৈনন্দিন আয় বাড়বে। এ কারণে তারা অত্যন্ত খুশি। একই সঙ্গে চাল আমদানির ফলে সরকারের রাজস্ব আহরণের পাশাপাশি বন্দরের দৈনন্দিন আয়ও বাড়বে। আমদানীকৃত চাল দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করে যেন দ্রুত খালাসের ছাড়করণ দেয়া হয় সে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি