চিকিসককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে, মামলা দায়ের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাবনার সাথী পারভীন নামে এক নারীর বিরুদ্ধে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মুহাম্মদ শহিদুল হক নামে একজন চিকিৎসককে বিয়ে করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। তবে তার অত্যাচার সইতে না পেরে তাকে তালাক দেওয়ার পরও রেহাই পাচ্ছেন না ওই চিকিৎসক। ফলে গত বৃহস্পতিবার সাথী পারভীনের বিরুদ্ধে যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ আহমেদের আদালতে মামলা করেন মুহাম্মদ শহিদুল হক। বিচারক তার অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন। চিকিৎসক মুহাম্মদ শহিদুল হক শহরের শংকরপুর ইসহক সড়কের মৃত ফজলুল হকের ছেলে। অপরদিকে অভিযুক্ত সাথী পারভীন পাবনার পাবন থানার ঘরনাগড়ার মৃত মোকাদ্দেছ হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে তিনি রাজধানী ঢাকার কলাবাগানের ৭৭ নম্বর সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা।
চিকিৎসক মুহাম্মদ শহিদুল হক মামলায় উল্লেখ করেছেন, সাথী বেগমের সাথে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। এরপর মোবাইল ফোনে তাদের দু’জনের মাঝে মধ্যে কথা হতো। আলাপের এক পর্যায়ে সাথী পারভীন জানতে পারেন যে, তিনি (বাদী) একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং চাকরিজনিত কারণে ঢাকায় অবস্থান করেন। এ কারণে ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর মায়ের মিথ্যা অসুস্থতার কথা বলে চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলতে তার সাথে দেখা করতে চান সাথী পারভীন। তিনি এ সময় তাকে বিকেলে হাসপাতালে তার চেম্বারে দেখা করতে বলেন। কিন্তু সচতুর সাথী পারভীন বন্ধুত্বের দাবি নিয়ে ‘গুরুতর অসুস্থ মায়ের’ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেম্বারের পরিবর্তে বাসায় দেখা করতে চান। এক পর্যায়ে তিনি রাজি হলে মায়ের চিকিৎসাজনিত প্যাথলজি পরীক্ষার কাগজপত্র দেখানোর কথা বলে তার বাসায় আসেন। তবে এর আগে তার বাসার সামনে অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন ভাড়টিয়া মাস্তানকে দাঁড় করিয়ে রেখে দেন সাথী পারভীন। ঘরে ঢোকার পর নানাভাবে আজেবাজে কথার এক পর্যায়ে তিনি পরনের পোশাকও এলোমেলো করতে থাকেন। এরই মধ্যে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা মাস্তানেরা ঘরে ঢুকে পড়েন। এ সময় কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই সাথী পারভীন তাকে জড়িয়ে ধরেন এবং মাস্তানেরা তাদের ছবি তুলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান। তারা তাকে সাথী পারভীনকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন। এ সময় সাথী পারভীন নিজেকে ঢাকার এলজিইডি’র একজন প্রকৌশলী হিসেবেও নিজেকে পরিচয় দেন এবং আর কোনো অন্যায় করবেন না বলে জানান। কিন্তু পরে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে তার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রাখেন তিনি (বাদী। এরই এক পর্যায়ে সাথী পারভীন আগের সংসারের মেয়েকে নিয়ে তার বাসায় নিয়ে আসেন। মেয়েকে সেখানে রেখে দেন। সাথী পারভীন তাকে (বাদী) ব্লাকমেইলিং করে তার কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়াও শুরু করেন। তাকে নানাভাবে অত্যাচার করতে থাকেন। এই অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে গত ২৬ জুলাই তিনি কলাবাগান থানায় একটি জিডি করেন। পরে যশোরে এসে ২৮ জুলাই সাথী পারভীনকে তালাক দেন। তালাকের কাগজের কপি পেয়ে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন সাথী পারভীন। তাকে গালিগালাজ করা ছাড়াও নানাভাবে ক্ষতি করার হুমকিও দেয়া হয়। কিন্তু ঢাকায় হাসপাতাল চেম্বার ও বাসায় তাকে খুঁজে না পেয়ে গত ১২ নভেম্বর দুপুরে অজ্ঞাতনামা দুই ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে যশোরের বাড়িতে আসেন সাথী পারভীন। এ সময় হুমকি ধামকি দিয়ে তার কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে সাথী পারভীন ঘরের আলমারিতে থাকা সোনালী ব্যাংক ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল শাখার একটি চেকবই নিয়ে যান। পরে তাকে নানা হুমকি দেওয়ার পর বিকেলে তার বাড়ি থেকে চলে যান সাথী পারভীন। এ কারণে তিনি আশঙ্কা করছেন যে, ওই চেকবইয়ে তার স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করা হতে পারে। ফলে চেকবই উদ্ধার করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।